পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-প্রথম খণ্ড.djvu/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কথা ভেবেছ? ঐ রকম আর গোটা পঞ্চাশ কামান আর হাজার দশেক গোলা তৈরি হলেই উনি লড়াই করতে বেরুবেন।

 সব নতুন রকম হচ্ছে বুঝি?

 নতুন না তো কি? নতুন, অথচ সস্তা! ঐ দেখ কামান আর ঐ দেখ গোলা, কামানে কি আছে? নল আছে আর বাতাসভরা হাপর আছে। নলের মধ্যে গোলা ভরে খুব খানিক দম নিয়ে ভ-শ করে যেমনি হাপর চেপে ধরবে অমনি হুশ করে গোলা গিয়ে ছিটকে পড়বে আর ফট করে ফেটে যাবে।

 তারপরে?

 তার পরেই তো হচ্ছে আসল মজা। গোলার মধ্যে কি আছে জান? বিছুটির আরক আছে, লঙ্কার ধোঁয়া আছে, ছারপোকার আতর আছে, গাঁদালের রস আছে, পচা মুলোর এক্সট্রাক্ট আছে, আরো যে কত কি আছে, তার নামও আমি জানি না। যতরকম উৎকট বিশ্রী গন্ধ আছে, যত রকম ঝাঁঝালো, তেজালো, বিটকেল জিনিস আছে, আশ্চর্য বৈজ্ঞানিক কৌশলে সব তিনি মিশিয়েছেন ঐ গোলার মধ্যে। সেদিন ছোট একটা গোলা ওঁর হাত থেকে প'ড়ে ফেটে গিয়েছিল শুনেছ তো?

 তাই নাকি? তারপর হল কি?

 যেমনি গোলা ফাটল অমনি তিনি চট্ করে একটা ধামা চাপা দিয়েছিলেন, নইলে কি হত কে জানে। তবু দেখছ ওষুধের গন্ধে আর ঝাঁঝে প্রফেসারের চেহারা কেমন হয়ে গেছে। তার আগে ওঁর চেহারা ছিল ঠিক কার্তিকের মত; মাথাভরা কোঁকড়া চুল আর এক হাত লম্বা দাড়ি! সত্যি!

 সত্যি নাকি?

 সত্যি না তো কি?

সন্দেশ—১৩২৪
১৯৮
সুকুমার সমগ্র রচনাবলী