সবে বলে, “হায় কি হল! রাজা বুঝি ভেবেই মোলো!
ওগো রাজা মুখটি খোল— কও না ইহার কারণ কি?
রাঙামুখ পান্সে যেন তেলে ভাজা আম্সি হেন,
রাজা এত ঘামছে কেন— শুনতে মোদের বারণ কি?”
রাজা বলে, “কেইবা শোনে যে কথাটা ঘুরছে মনে,
মগজের নানান্ কোণে— আনছি টেনে বাইরে তায়,
সে কথাটি বলছি শোন, যতই ভাব যতই গোণ,
নাহি তার জবাব কোন কুলকিনারা নাই রে হায়।
লেখা আছে পুঁথির পাতে, ‘ন্যাড়া যায় বেলতলাতে,’
নাহি কোনো সন্দ তাতে— কিন্তু প্রশ্ন ‘কবার যায়?’
এ কথাটা এদ্দিনেও পারে নিকো বুঝতে কেও,
লেখে নিকো পুস্তকেও, দিচ্ছে না কেউ জবাব তায়।
লাখোবার যায় যদি সে যাওয়া তার ঠেকায় কিসে?
ভেবে তাই পাই নে দিশে নাই কি কিচ্ছু উপায় তার?”
এ কথাটা যেমনি বলা রোগা এক ভিস্তিওলা
ঢিপ্ ক’রে বাড়িয়ে গলা প্রণাম করল দু’পায় তাঁর।
হেসে বলে, “আজ্ঞে সে কি? এতে আর গোল হবে কি?
নেড়াকে তো নিত্য দেখি আপন চোখে পরিষ্কার—
আমাদেরি বেলতলা যে নেড়া সেথা খেলতে আসে
হরে দরে হয় ত মাসে নিদেন পক্ষে পঁচিশ বার।”
পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-প্রথম খণ্ড.djvu/৪৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
সুকুমার সমগ্র রচনাবলী