বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:সেই সব শহীদেরা - পিনাকী বিশ্বাস (২০২২).pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষদের জন্য সাক্ষরতা কর্মসূচী নেওয়া হয়।

 ১৯২৯ সালের গোড়ায় মিথ্যা ডাকাতির মামলা দিয়ে পুলিশ বিষ্ণু চট্টোপাধ্যায়কে, প্রথম ভৌমিক ও যুবসংঘের অন্যান্য কর্মীদের সাথে গ্রেপ্তার করে। কিছুকাল পড়ে প্রমাণাভাবে মুক্তি পেলেও আইন অমান্য আন্দোলনে অংশগ্রহণ করবার জন্য পরের বছরই অর্থাৎ ১৯৩০ এর ২রা মে, Bengal Criminal Law(Amendment) Act, 1930-এ বন্দী করে। বন্দী হন তাঁর ভাই নারায়ণও। জেলে থাকাকালীন তিনি বিশিষ্ট কমিউনিস্ট নেতা আব্দুর রেজ্জাক খাঁর সাহচর্যে সমাজতান্ত্রিক আদর্শে প্রাণিত হন, ১৯৩৭ সালে স্বগৃহে অন্তরীণ থাকার শর্তে মুক্তি পেয়ে মার্কসবাদের প্রতি অবিচল আস্থা নিয়ে যোগ দেন কমিউনিস্ট পারটিতে। খুলনা জেলাকমিটির সদস্য হিসাবে কাজ করতে থাকেন গ্রামাঞ্চলে।

 ৪০-এর দশক থেকে যশোর-খুলনা সাথক্ষীরা শোভনা এলাকায় তেভাগার দাবিতে বর্গাদার ও সাধারণ ভাগচাষীরা তিব্র আন্দোলন শুরু করেন। পুরোভাগে ছিলেন কমঃ বিষ্ণু চট্টোপাধ্যায়। স্বতঃস্ফূর্ত এই আন্দোলনকে সাংগঠনিক রুপ দেওয়ার জন্য বিরামহীনভাবে জেলার একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত ছুটে চললেন তিনি। 'জান দেব তবু ধান দেব না' শ্লোগান আক্ষরিক অর্থেই বাস্তবে পরিণত হয়েছিল সেদিন।

 ডুমুরিয়া থানা এলাকার বিপুল সংখ্যক খেতমজুর, ভাগচাষী, মাঝারি কৃষক সকলেই তেভাগার উত্তাল আহ্বানে হিন্দু-মুসলমান ভেদনীতিকে চূর্ণ করে কমঃ বিষ্ণুর সাথে যোগ দিলেন। তিব্র জঙ্গী আন্দোলন আতঙ্কিত করে তুলল শাসকশ্রেণীকে। পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিলেন হাজারীপদ মণ্ডল। কয়েক হাজার কৃষক একত্রিত হয়ে বিষ্ণু চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শোভনার ‘সিখাবাহী নদীর বাঁধ ও ‘নবেকী'র বাঁধ বেঁধে দিলো বন্দুকধারী পুলিশ ও জমিদারের ভাড়াটে গুন্দাবাহিনীর সামনেই। জমিদারেরা বহুকাল ধরে দুর্নীতিগ্রস্ত আমলাদের সাহায্যে চাসজমিতে নোনাজল ঢুকিয়ে ভাতে মারার ব্যাবস্থা করত কৃষকদের, এই বর্বর প্রথা রুখে দিয়ে স্থানীয় শ্রমজীবী জনতার

৮৭