পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 “সে” আমাকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে বললে, রাগ কোরো না, দাদা, হক্‌ কথা বলব, তোমারো শোধনের দরকার হয়েছে।

 বে-আদব কোথাকার, কিসের শোধন আমার?

 তোমার ঐ বুড়োমির শোধন। বয়স তো কম হয়নি তবু ছেলেমানুষিতে পাকা হোতে পারলে না।

 প্রমাণ পেলে কিসে?

 এই যে রিপোর্টটা পড়ে শোনালে, ওটা তো আগাগোড়া ব্যঙ্গ, প্রবীণ বয়সের জ্যাঠামি। দেখলে না পুপুদিদির মুখ, কী রকম গম্ভীর। বোধ হয় গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল। ভাবছিল, রোঁয়া-চাঁচা শেয়ালটা এখনি এল বুঝি তার কাছে নালিশ করতে। বুদ্ধির মাত্রাটা একটু কমাতে যদি না পারো তাহোলে গল্প-বলা ছেড়ে দাও।

 ওটা কমানো আমার পক্ষে শক্ত। তুমি বুঝবে কী ক’রে, তোমাকে তে চেষ্টাই করতে হয় না, বিধাতা আছেন তোমার সহায়।

 দাদা, রাগ করছ বটে, কিন্তু আমি ব’লে দিলুম, বুদ্ধির ঝাঁজে তোমার রস যাচ্চে শুকিয়ে। মজা করছ মনে করো কিন্তু তোমার ঠাট্টা গায়ে ঠেকলে ঝামার মতো লাগে। এর আগে তোমাকে অনেকবার সতর্ক করে দিয়েছি— হাসতে গিয়ে হাসাতে গিয়ে পরকাল খুইয়ো না। ল্যাজকাটা শেয়ালের কথা শুনে পুপুদিদির চোখ জলে ভরে এসেছিল দেখতে পাওনি বুঝি। বলে তো আজই তাকে আমি একটুখানি হাসিয়ে দিইগে-বিশুদ্ধ হাসি, তাতে বুদ্ধির ভ্যাজাল নেই।

 লেখা তৈরি আছে না কি?

 আছে। নাটকি চালের আলাপ। বললেই হবে, আমাদের পাড়ার উধো গোবরা আর পঞ্চুতে মিলে কথা হচ্চে। ওদের সবাইকে দিদি চেনে।

 আচ্ছা, বেশ দেখা যাক্‌।

২২