পাতা:সে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 পঞ্চু। চল্‌ ভাই চল্‌, খোঁজ করতে বেরই। কিন্তু চিনব কী ক’রে?

 উধো। সেই তো মুস্কিল। কেউ তো তাকে দেখেনি। আবার হবি তো হ’, ভেকু বেটার চোখ গেল চিটেগুড়ে বুজে’।

 পঞ্চু। তবে উপায়?

 উধো। আমি তো হাটে ঘাটে যাকে দেখছি তাকেই জোড়হাত ক’রে জিগেস করছি, দয়া ক’রে জানাও, তুমিই কি গেছো বাবা? শুনে তারা তেড়ে মারতে আসে। একজন তো দিল আমার মাথায় হুঁকোর জল ঢেলে।

 গোবরা। তা দিক্‌ গে। ছাড়া হবে না। খুঁজে বের করবই। যা থাকে কপালে।

 পঞ্চু। ভেকু বলে, গাছে চড়লেই তবে বাবার চেহারা ধরা পড়ে, যখন নিচে থাকেন চেনবারই জো নেই।

 উধো। গাছে চড়িয়ে চড়িয়ে মানুষকে পরখ করব কী ক’রে ভাই? আমি এক বুদ্ধি করেছি,আমার আমড়া গাছ আমড়ায় ভরে গেছে, যাকে দেখছি তাকেই বলছি, আমড়া পেড়ে নাও—গাছটা প্রায় খালি হয়ে এল, ডালগুলোও ভেঙেছে।

 পঞ্চু। আর দেরি নয়রে চল্। কপালের জোর যদি থাকে তবে দর্শন লাভ হবেই। একবার গলা ছেড়ে ডাক দে না ভাই! গেছো বাবা, ও বাবা, দয়াল বাবা, পারুল বনে কোথাও যদি থাকো লুকিয়ে একবার অভাগাদের দর্শন দাও।

 গোবরা। ওরে হয়েছে রে, দয়া হোলো বুঝি!

 পঞ্চু। কই রে কই।

 গোবরা। ঐ যে চালতা গাছে।

 পঞ্চু। কী রে চালতা গাছে কী, দেখছিনে তো কিছু!

 গোবরা। ঐ যে দুলছে!

২৬