পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৶৹

পূজ্যপাদ কবি রবীন্দ্রনাথ য়ুরোপ প্রত্যাগমনের পর ১৩২৮ সালের আশ্বিন সংখ্যা ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় “শিক্ষার মিলন” শীর্ষক একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ লেখেন! “শিক্ষার বিরোধ’ সে প্রবন্ধটির প্রতিবাদ। পরে ‘শিক্ষার মিলন' সংশোধিত ও পরিবর্ত্তিত আকারে একটি স্বতন্ত্র পুস্তিকাকারে প্রকাশিত হইয়াছে। ‘শিক্ষার বিরোধে’ যে সকল প্রসঙ্গ আলোচিত হইয়াছে, তাহা উক্ত পুস্তিকায় সন্ধান করিলে পাঠক নিরাশ হইবেন। সকল কথার সামঞ্জস্য খুঁজিতে হইলে মূল প্রবন্ধটি পড়া দরকার।

স্বর্গীয় দেশবন্ধুর কারামুক্তির পর মির্জ্জাপুর পার্কে (বর্ত্তমান শ্রদ্ধানন্দ পার্ক) দেশবাসীর পক্ষ হইতে তাঁহাকে যে অভিনন্দন পত্র দেওয়া হয়, তাহা শরৎচন্দ্রের রচনা। অভিনন্দন রচনায় প্রাণ ও নৈপুণ্যের প্রসঙ্গ বাদ দিলেও আর একটি বিশেষত্বের জন্য ইহা চিরস্মরণীয় হইবার যোগ্য। পূর্ব্বে অভিনন্দন-পত্র রচনার যে সাধারণ রীতি প্রচলিত ছিল, ইহা তাহার প্রভাব হইতে মুক্ত ত বটেই উপরন্তু বর্ত্তমান যুগের অভিনন্দন-পত্র রচনা-রীতির উপর ইহারই প্রভাব লক্ষিত হয়।

“আধুনিক সাহিত্যের কৈফিয়ৎ” “সাহিত্য ও নীতি,” “সাহিত্যে আট ও দূর্নীতি” এবং প্রসঙ্গ ক্রমে ৫৪তম বাৎসরিক জন্মতিথিতে, “বঙ্কিম-শরৎ সমিতির অভিনন্দনের উত্তরে, প্রেসিডেন্সি কলেজে পঠিত অভিভাষণে” ও অন্যান্য প্রবন্ধে একই বিষয়ের অবতারণা দেখা যায়। এখানে একটা কথা মনে রাখা দরকার যে, কয়েক বৎসর পূর্ব্বে জনকয়েক শুচিবায়ুগ্রস্ত সমালোচকের কৃপায় আধুনিক সাহিত্যিকদের বিরুদ্ধে একটা তীব্র আন্দোলনের সৃষ্টি হয় এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষে বিশেষভাবে শরং-সাহিত্যের প্রতিই সকলে “দুই হাত পুরিয়া বিদ্বেষের আবর্জ্জনা নিক্ষেপ করিতে থাকেন।” উপরোক্ত প্রবন্ধগুলি তাহার প্রতিবাদে সে সময়েরই রচনা। সব ক’টি প্রবন্ধ ও অভিভাষণেই তিনি সাধারণতঃ তাঁহার