পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৬ কি সে তেজ ছড়ানে নেই ? আমি নিশ্চয় বলছি, আমি যেমন আঞ্জ এগানে এ রকম ক’রে ভাবছি— তেমনি আরও অনেকেই ভাবছেন । প্রাণে প্রাণে আমাদের বৈদ্যুতিক সংবাদ চালিত হচ্চেঃ আমরা কৃতকার্য্য হবই হব । সময় এসেছে ---সমল্প এসেছে, —অদ্যায় চিরদিন জয়ী হয় না।” দেবব্রত ভট্টাচার্য্যের নয়নে আনন্দমঠের দেবীমূৰ্ত্তি সহসা বিভাসিত হইয়া উঠিল, তাহার কণ্ঠ হইতে বাল্মীকির প্রথম গীতি-ধ্বনির গুiয় উচ্চারিত হইল— দেবী-ম, তুমি ধষ্ঠ ! =て一ーアーTTマラーIマ অষ্টম পরিচ্ছেদ রাজা অতুলেশ্বর অতুলেশ্বর ধগন নিতান্ত শিশু, তখন তাঙ্গর পিত। রাজা ধৰ্ম্মেশ্বয়ের মৃত্যু হয়। র্তাঙ্গর অভিভাবক পিতৃব্য নিঃসস্তান রাজা কম্মেশ্বর লাতুপুলকে সন্তানের মতই স্নেহ করিতেন । কৰ্ম্মেশ্বর লোক মন্দ ছিলেন না—কিন্তু পান-দোষে র্তfহীকে নিস্তেজ ও অকৰ্ম্মণ্য করিয়া তুলিয়া ছিল । প্রসাদপুরের রাজগণ চিরদিনই কলা-বিস্কার অনুরাগী এবং উৎসাহদান্ত । অতুলেশ্বরের পিতামহরচিত সঙ্গীতবিলী বৈষ্ণব কবিদিগের পদাবলীর ন্তায় পুৰ্ব্বাঞ্চলে সমাদরে গীত হইয়া থাকে। কৰ্ম্মে শ্বরের যদিও রচনা-ক্ষমতা নষ্ট, কিন্তু গানবাদ্য লইয়াই প্রায় তাহার সময় কাটে। যাত্রাদি পর্বের ত কথাই নাই – সময় সময় কলিকাতা হইতে বাইজার দল— এবং থিয়েটার ও আসে । তিনি শুনিয়াছিলেন— কলিকাতার কোন ধনিভবনে হীরা, বুলবুল নামে দুই সুবিখ্যাত গায়িকার সহিত সঙ্গৎ করিতে গিয়া অদ্বিতীয় পাখোয়াজী গোলাম অবিবাসের এত পরিশ্রম হইয়াছিল যে, গান-শেষে হার্টফেল করিয়। তথনি তাহার মৃত্যু হয । অদ্বিতীয় গোলাম আব্বাসের অভাবে তিনি যে পাইঞ্জী দুইজনকে রাজসভায় আহবান করিতে পারিলেন ন—এষ্ট অণপশোযে র্তাহারও হার্টফেল করিবার উপক্রম হইয়াছিল। ইহা ছাড়া তাহার মোসাহেব দল মাঝে মাঝে সখের যাত্রাও করিত এবং তাহীর সভায় কবির লড়াইও চলিত। এই যুদ্ধে তিনি যাহাকে বাহবা প্রদান করিতেন— তাহার অবস্থা ফিরিয়া মাইছ । নিয়ে একটি উদাহরণ প্রদত্ব হইল । স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী একটু ফ্রিকা-রঙের থোস মেজাজে রাজা কহিলেন —“আজ অমাবস্তার রাত, চাদ উঠবে কি না বল ত হে?” একজন তৎক্ষণাৎ উঠিয়া গান ধরিল— আমরা মোদের রাজারেই জানি ; স্বৰ্য্য-চন্দ্রের না ধারি ধার স্বমকে না মানি । রাজা মোদের ঢালেন মুধা— তৃপ্ত করেন তৃষ্ণ-ক্ষুধ1– ' সৰ্ব্বপ্রাণে স্তুতিগানে—-তারেই বাখানি। তাহার গান শেষ হইলে দ্বিতীয়জন গাহিল— শ্ৰীবৃন্দাবনে-ও গো শ্ৰীবৃন্দাবনে— ধরা দিল আমার শশী রাধিকার সনে । যে দেখিল সেই মজিল—গ্রাণে মনে । তৃতীয়জন তখন তান দিয়া গান ধরিল প্রেমের বন্ত উথলে যখন ওঠে গো মনে— আধারের বাধ আপনি যায় টুটে— অমাবস্তায় ভরা চাদ ফোটে আলোক-ফুলের ঝরণা লোটে—-বিশ্ব-ভূবনে । রজ ইহা কেই সভা-কবির শিরোপ। প্রদান করিলেন । রীতিমত নেশা সুরু হইলে কিন্তু রাজা ভিন্ন লোক হইয়া পড়েন -- তখন তাহাকে সামলান দায় হইয়া উঠে । সে সময় প্রায়ই তিনি পদবজে ভ্রমণে বহির্গত হন । তাহার দল বল সঙ্গে সঙ্গে ছুটিতে থাকে । অগ্রগামী রাজার আর্শ্বে-পাশ্বে, পশ্চাতে থাকিয়া—মোসাহেবগণ কেহ ধরেন আলবোলা ( নলটি কিন্তু রাজার মুখে ) কাহারও হাতে মদের বোতল, কেহ লইয়াছেন গ্লাস, কাহারও গলায় মৃদঙ্গ ঝুলিতেছে—কেহ বা সেতারা তানপুরা বহিয়া চলিয়াছেন। এই অপরূপ দৃশু যে দেখে, তাহার হাস্ত সম্বরণ করা দুঃসাধ্য হইয়া উঠে । অতুলেশ্বর কলিকাতায় থাকিয় পড়াশুনা করিতেন । ছুটিতে যখন বাড়ী আদিতেন, তখন কৰ্ম্মেশ্বর খুব সাবধান হইয়া চলিতেন—এরূপ দৃপ্ত র্তাহার নজরে পণ্ডিত না ।--—একবার মাত্র অসময়ে বাড়ী আসিয়া খুল্লতাতের এই অবস্থা তিনি দেখিয়াছিলেন —কিন্তু দেখিয় তাহার হাসি পায় নাই, হৃদয় লজ্জায় বেদনায় অভিভূত হইয় পড়িয়াছিল। তাহার সমবস্থলী দূরসম্পৰ্কীয় এক জন আত্মীয়কে তখন হাসিতে দেখিয়া তিনি আত্মসম্বরণ করিতে পারেন নাই,