পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টাবিংশ পরিচ্ছেদ : ১০৫ বিধকে ফিরাইবার জন্য সে তাঁহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিল ; কিন্ত কোন মুতেই ফিরাইতে পারিল না । বিধ্যভাষণ দেরি না করিয়া একেবারে ডাকঘরে গেলেন । তথায় ডাকমন্সীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “গোপালের নামে যে রেজেক্টরী চিঠি আসত, তা কার নিকট দেওয়া হ’ত ?” ডাকমন্সী কহিল, “সে সব চিঠি গোপাল বাবকেই দিয়াছি । তাঁর হাতের রসিদ আছে।” বিধ: রসিদ আমি চাই না । হরকরকে বলন, আমাকে সেই গোপাল বাবকে দেখাইয়া দিক । বলিবা মাত্র ডাকমন্সেী হরকরাকে বিধভষেণের সহিত পাঠাঁইয়া দিল । হরকরা বিধকে শশিভষণের বাটী লইয়া গেল । গদাধর যে যথার্থই চিঠি লইয়াছিল, সে বিষয়ে এখন আর বিধর সন্দেহ রহিল না। শশিভষেণের বাটীর দ্বারে আসিয়া তিনি গদাধরের রােপ বণনা করিয়া কহিলেন, কেমন, গোপাল বাবর ত এমনি চেহারা ?” হরকরা উত্তর করিল, "হাঁ মহাশয় ! আপনি ঠিক বলেছেন ।” বিধ কহিলেন, "তবে আর চেনাবার দরকার নাই । তুমি ঘরে যাও ; আমি বুঝেছি। কিন্ত খবরদার, এ কথা যেন প্রকাশ না হয়, টাকা গোপাল পায় নাই । অন্য একজন নিয়েছে । প্রকাশ হ’লে চোর ধরা যাবে না ।” বিধভষেণের কথা শুনিয়া হরকরার মুখ শুকাইয়া গেল । কল্পিত কলেবরে কহিল, "মশায়, এতে আমার অপরাধ নেই । আমাকে উনি বলেন, “আমি গোপাল বাব, সুতরাং আমি ও'কেই চিঠি দিয়েছি । দেখবেন, যেন গরিব না মারা যায়।” বিধ । তোমার ভয় কি ? কিন্ত যদি এ কথা প্রকাশ হয়, আর যদি আসামী পলায়, তা হলে আমি তোমাকেই ধরবো । হরকরা “আমার দ্বারা এ কথা প্রকাশ হবে না" এই বলিয়া চিন্তাকল চিত্তে চলিয়া গেল । বিধ ভাষণ থানায় দারোগার কাছে গেলেন । বিধভাষণ থানায় গিয়া দারোগার নিকট এ সমস্ত কথা বলিলে দারোগা বাব: কহিলেন, আজ সন্ধ্যা হয়েছে, এখন গেলে আসামী ধরা যাবে না । কাল সকালে আসবেন । লোকজন নিয়ে যাব, তা হলে অনায়াসে আসামী ধরা পড়বে ।" বিধভাষণ কহিলেন, যদি এ কথা রাত্রের মধ্যে প্রকাশ হয় আর যদি আসামী পালায়, তা হ’লে কি হবে ?" দারোগা বাব উত্তর করিলেন, “আমি তার উপায় করছি।" এই বলিয়া রমেশ কনটেবলকে কহিলেন, “রমেশ, আজ চার জন কনটেবল যেন শশীবাবর বাড়ীতে রোদে থাকে । কাল খানাতল্লাসি করতে হবে । আসামী ঐ বাড়ীতে আছে, কিন্ত খবরদার, যেন এ কথা প্রকাশ না হয় । প্রকাশ হ’লে আসামী পাওয়া যাবে না ।"