পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তক্রিংশ পরিচ্ছেদ : ১৩৭ সবণ চাপ করিয়া রহিলেন। গরদেব কহিলেন, “মা, তুমি এখানেই থাক । হেম কেমন থাকে, তুমি প্রত্যহই খবর পাবে।” সবণলতা অগত্যা গরের আলয়ে বাস করিতে সম্মত হইলেন। শশাঙ্কশেখর সবণের পিতামহীকে সমভিব্যাহারে লইয়া কলিকাতায় উপনীত হইলেন । অদ্য তিন দিবস হেমচন্দ্র অজ্ঞান হইয়া আছেন। ডাক্তার সাহেব প্রাতঃকালে নিয়মিতরাপে রোগীকে দেখিতে আসিলেন । হেমের চেহারার কিঞ্চিৎ পরিবত্তন হইয়াছে । ডাক্তার সাহেব প্রফলিত হইলেন । ঘড়ি খলিয়া হাত দেখিয়া কহিলেন, “আর ভয় নাই, এ যাত্রা রক্ষা পাইলেন ।” শুনিয়া গোপাল যার-পর-নাই আহলাদিত হইলেন । এমন সময় হেমের পিতামহী ও শশাঙ্কশেখর আসিয়া উপস্থিত হইলেন। বাটী পে'ছিবা মাত্রই তাঁহারা হেমের শয়নাগারে গমন করিলেন। হেম চক্ষরমীলন করিয়া গোপালকে দেখিতে না পাইয়া কহিলেন, “গোপাল ?" তাঁহার পিতামহী কহিলেন, “এই দাদা, আমি এসেছি, কি চাও ?” এই বলিয়া তিনি শয্যার পা*েব উপবেশন করিলেন । হেম কহিলেন "গোপাল কোথায় ? সপ্তত্রিংশ পরিচ্ছদ শেয়ানে শেয়ানে কোলাকুলি শশাঙ্কশেখর মতিগিরি হেমের পিতামহীকে কলিকাতায় রাখিয়া সেই দিবসই বাটী আসিলেন । বৰ্ণলতা শশাঙ্কশেখরকে জিজ্ঞাসিলেন, "দাদাকে কেমন দেখে এলেন ?" শশাঙ্ক উত্তর করিলেন, “কোন চিন্তা নাই, তাঁর পীড়। অনেক বিশেয হয়েছে । সত্বরই আরোগ্য লাভ করবেন।” শশাঙ্কশেখরের কথা শুনিয়া সবণলতা অনেক আশ্বস্ত হইলেন ও জিজ্ঞাসিলেন, “আমি সেখানে কবে যেতে পারবো ?” শশাঙ্কশেখর উত্তর করিলেন, “তিনি ভাল ক’রে আরোগ্য না হ’লে তোমার সেখানে যাওয়া উচিত নয় । কি জানি, যদি তোমারও বসন্ত হয়, কিন্ত তুমি এত ব্যস্ত হয়েছ কেন সবণ ? তোমার কি এখানে অযত্ন হচেছ ?” সবণলতা আগ্রহ সহকারে উত্তর করিলেন, “না না, আমার কোনই অযত্ন হয় নাই। আমি ভাবছি, দাদার পাছে কোন অষত্ব হচ্ছে । সেই জন্যই আমি যেতে এত ব্যগ্ন হয়েছি ।" শশাঙ্কশেখর বলিলেন, “সে বিষয়ে কোন চিন্তা ক'রো না মা ; সেখানে যে গোপাল নামে ছেলেটি আছে, সে থাকতে তোমার দাদার কোন অযত্ন হবে