পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ১৪৮ হইয়া গেলেন, একট পরে ফিরিয়া আসিয়া কহিলেন, “আমাকে কিছু খরচ দিন । শীঘ্ৰ, দেরি না হয় ।” পিতামহী বাক্স খলিয়া একখানি নোট দিলেন। গোপাল নোটখনি পকেটে রাখিয়া দৌড়িয়া ঘরের বাহির হইলেন। সৌভাগ্যক্রমে রাস্তায় বাহির হইয়া দেখিলেন, একখানা খালি গাড়ী যাইতেছে । গাড়োয়ানকে কহিলেন, “আমাকে গাড়ী ছাড়বার আগে যদি হাবড়া-ঘাটে পে'ছিয়া দিতে পার, তবে তোমাকে ভাল বকশিশ দেব ।” গাড়োয়ান গাড়ী থামাইল । গোপাল অবিলম্বে গাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করিলেন । অবপঠে কশাঘাত করিব মাত্রই গাড়ী প্রবল বেগে চলিল। দেখিতে দেখিতে হাবড়া-ঘাটে আসিয়া উপস্থিত হইল । গোপাল হাবড়া-ঘাটে পে'ছিয়া দেখিলেন, ষ্টীমার ছাড়িবার উদ্যোগ করিতেছে । পকেট হইতে নোটখনি বাহির করিয়া দেখেন কড়ি টাকার । গাড়োয়ানকে কহিলেন, "তোমার কাছে টাকা আছে ?” সে কহিল, “না” । নিকটে একজন ভাগে ভাগে পয়সা রাখিয়া বিক্রয় করিতেছে । গোপাল নোটখানি তাহাকে দিয়া কহিলেন, “আমাকে পনের টাকা আর গাড়োয়ানকে পাঁচ টাকা দাও ” টাকাগুলি লইয়াই দৌড়িয়া ঘাটে গেলেন। দোকানী গাড়োয়ানকে পাঁচ টাকা দিল । গোপালও নদীর ধারে গেলেন, অমনি টীমার “হসে হস” করিয়া যেন তাঁহাকে ঠাট্টা করিতে করিতে চলিয়া গেল । গোপাল নিরপোয় ভাবিয়া একখানি নৌকায় উঠিলেন । মাঝিকে কহিলেন, “গাড়ী ছাড়বার প্রবে। যদি আমাকে পার ক'রে দিতে পার, তা হ’লে তোমাকে এক টাকা বকশিশ দেবো।” এই বলিয়া টাকাটি ফেলিয়া দিলেন। মাঝি কহিল, “হয় রুক্তা, তা পারম । আপনি বৈসেন।” এই বলিয়া টাকাটি কড়াইয়া লইয়া নৌকা খলিয়া দিল । গাড়ী ছাড়াবার প্রবক্ষণ, বংশীধ্বনিসদৃশ শব্দ হইতেছে, এমন সময় নৌকা কলে লাগিল । গোপাল তদন্ডে লাফ দিয়া তীরে উঠিয়া যাইবেন, কিন্তু মাঝিরা আসিয়া ভাড়া চাহিল । গোপাল কহিলেন, “একবার দিয়েছি ত " মাঝি কহিল, “হয় করতো, ও ত বকশিশ দিছেন। এখন ভাড়া দ্যান না।" গোপাল মাঝির কথা শুনিয়া চলিয়া যাইতে লাগিলেন। গাজি বদরের চর গোপালের রাস্তায় গিয়া দাঁড়াইল । গোপাল পকেট হইতে একটি টাকা ফেলিয়া দিয়া চলিলেন । তিনিও স্টেশনে পেী"ছিলেন, গাড়ীও ছাড়িল । গোপাল দুঃসাহসে নিভর করিয়া লাফ দিয়া গাড়ীর চরণাধারে চড়িলেন এবং পরক্ষণেই দয়ার খলিয়া গাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করিলেন । টিকিট লওয়া হইল না । গাড়ীতে প্রবেশ করিয়া গোপালের মাথা ঘুরিতে লাগিল এবং সবংিগ