পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম পরিচ্ছেদ : ১৯ যাবার সময় ঠাকর নিজে ব’লৈ গেলেন ।” “কি বললেন ?” “কাছারি যাবার সময় আমাদের আজকার মতন গোয়ালে রাঁদতে বললেন, পরে কাল একটা ঘর দেখে দেবেন।” বিধভষেণ জিজ্ঞাসা করিলেন, “পথেক ক’রে দিলেন কেন ?" সরলা উত্তর করিলেন, “আমি ত আর কিছুই জানি না । বোধ হয়, সেই মনোহারীর দোকানের কাছে যে কথা হয়েছিল, তাতেই রাগ করেছেন!" এই বলিয়া সরলা আন পৰিবক সমদায় বর্ণন করিলেন। বিধভষেণ শনিয়া হাসিয়া কহিলেন, “এর জন্য আর ভয় কি ? দাদা বাড়ী এলেই চকে যাবে। বোধ হয় তিনি সমদায় কথা শুনতে পান নাই। শুনতে পেলে তিনি এমন কাজ কখনই করিতেন না । এর জন্যে আর ভাবনা কি ?” সরলা স্বামীর বাক্যে তাবস্ত হইয়া কহিলেন, "মা দাগ করন, যেন তাই হয় । তোমার মথে ফলে চন্দন পড়কে ” বিধ । ফল চন্দন পরে পড়বে, আপাততঃ আমার মাথায় একটা তেল জল পড়কে । কাল রাত জেগে বড় অসুখ হয়েছে । তেল দাও, স্নান ক’রে আসি । বিধভষেণ সনান করিতে গেলেন । সরলা কিঞ্চিৎ আশবাসিত হইয়া ঠাকরণদিদিকে রন্ধনকায্যে সাহায্য করিবার জন্য রন্ধনশালায় গমন করিলেন । প্রমদা সরলাকে রান্নাঘরে প্রবেশ করিতে দেখিয়া শ্যামাকে ডাকিয়া উচ্চৈঃস্বরে জিজ্ঞাসা করিলেন, “শ্যামা, সকলে মিলে আবার রান্নাঘরে কেন গেলেন ? আমাদের রান্নাঘরে আর কারর গিয়ে কাজ নেই ।" শ্যামা তৎকালে বাটী ছিল না। কিন্তু তাহাতে ক্ষতি কি ? প্রমদা যাহার উপর রাগ করতেন, তাহার সহিত কথা কহিতেন না, কিন্তু তাহাকে কিছু বলিতে হইলে শ্যামাকে সবোধন করিয়া কহিতেন, শ্যামা তথায় থাকক আর নাই থাকক । প্রমদার কথা শুনিয়া সরলা রান্নাঘর হইতে প্রত্যাগমন করিয়া নিজ গহে আসিলেন । শ্যামা বাটী আসিল এবং রান্নাঘরে ঠাকরণদিদিকে দেখিয়া সরলার নিকটে গিরা জিজ্ঞাসা করিল, “বলি আজ কি তোমার ছুটি ? ঠাকরণদিদিকে একটিন দিয়াছ না কি ? • শ্যামার মুখে সদাই হাসি । হাসিতে হাসিতে সরলাকে উলিখিত প্রশ্ন করায় সরলা কহিলেন, “শ্যামা, তোর কি আর সময় অসময় নেই, ষখন তখনই হাসি।” “হাসবো না কি তোমার মতন ব’সে কাঁদবো ? কার জন্যে আমি কাঁদবো ?” এই কথা কহিতে কহিতে শ্যামার সবর গাঢ় হইয়া আসিল এবং চক্ষে এক বিন্দ বারিও দেখা দিল । শ্যামা যেন লজ্জিত হইয়া মুখ ফিরিয়া বসিল । * ፡፡ সরলা কহিলেন, “শ্যামা, আমাদের পথিক ক’রে দিয়েছেন, ঠাকরণদিদি ওদের জন্যে রাঁধছেন । আমাদের আজ কি হবে ভাবছি।” শ্যামা । পৃথক ক’রে দিয়াছেন ?