পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ২৬ ছল নেরে গহের এক কোণে একখানা টলের উপর বসিয়া রহিলেন । রামা অন্যান্য ভ্যতাগণ নিদ্রা যাইতে লাগিল । - ক্ৰমে ক্ৰমে সন্ধ্যা আগতপ্রায় হইল । রাজবাটী বিধভষেণের বাটী হইতে নিতান্ত নিকটও নহে। রাত্রি অন্ধকার । সাত পাঁচ ভাবিয়া বিধভাষণ চলিয়া আসিবার উদ্যোগ করিতেছেন, এমন সময় গহের অভ্যন্তর হইতে “রামা রামা" শব্দ হইল । বাব জাগিলেন। বিধভাষণ একট: অপেক্ষা করিলেন । রামা নিদ্রিত । কিন্ত অন্য এক জন চাকর জাগরিত ছিল। পাছে রামার উত্তর না পাইয়া বাব তাহাকে ডাকেন, এ জন্য ব্যস্তসমস্ত হইয়া সে রামার গা টিপিয়া জাগাইয়া দল। রামা চোখ মছিতে মছিতে বলিল, “আজ্ঞা যাই ।" রামা যাইবার সময় বিধ ভাষণ কহিলেন, “রাম, বাপ, আমার কথাটা ব'লো একবার ।” রামা গহের কোণে দটি নিক্ষেপ করিয়া কহিল, “তুমি এখনও আছ ঠাকুর ?” বাব, রামাকে কহিলেন, “আজ শনিবার মনে আছে ত ? শ্যামবাব, চন্দ্রবাবুআর আর সকলে আসবেন, তার জোগাড় আছে ত ?" "জোগাড় আর কি ? ওই এক বোতল পোর্ট আছে আর এক বোতল শেরি।" বাব । এক বোতল শেরি কি রে ? তিন বোতল ছিল যে ? রামা তার দ্য বোতল পার করিয়াছে, বাবা তার বিন্দবিসগও জানেন না । রামা। ঐ জন্যেই ত আমি ওসব জিনিস রাখতে চাই নে ! সে দিন যে পাঁচ বোতল গেল, আপনি ত আর হিসাব রাখেন না ? বাব । সে দিন পাঁ—চ বোতল গেল ? রামা । আজ্ঞা গেলই ত ? বাব । তব: ত শ্যামবাব বাপের ভয়ে আর মাথা মড়াইয়া প্রায়শ্চিত্ত করার ভয়ে বেশী খায় না । ( জানালা দিয়া বৈঠকখানার দিকে দটি করিয়া) ও আবার কে : রামা ! ও এক ঠাকুর এসেছে। আপনি না কি ওকে কিছু দেবেন কথা ছিল, তাই নিতে এসেছে । বলছে—ওর আজ খাওয়া হয় নাই । বাব । ওকে আজ যেতে বল । বল-আমার ব্যারাম হয়েছে । কাল ধেন বৈকালে আসে । রামাকে আর আসিয়া বলিতে হইল না। বিধ ভাষণ বাহিরে বসিয়াই সমুদায় শুনিতে পাইয়াছিলেন । শনিয়াই প্রস্থান করিলেন। বাব বিধভষেণকে আপনা হইতে ভরসা দিয়াছিলেন, তাঁহার নিকট হইতে নিফল আসিতে হইবেক, বিধ, কখনই মনে করেন নাই, এ জন্য বাবর কথা শুনিয়া তিনি একেবারে ভাবনায় মিয়মাণ হইলেন । কি করেন, দুঃখে বাটী ফিরিয়া আসিয়া সরলাকে সমৃদয় পরিচয় দিলেন। সরলা কাঁদিতে লাগিলেন।