পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা প্রসঙ্গে : ০/০ সাহিত্যিক ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা ১২৯০ সালে এক পত্রের দ্বারা তারকনাথকে জানান— সহৃবর শ্ৰীযক্ত তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায় সমীপেষ । প্রিয়তমেষ নামের ভার নাই, বিজ্ঞাপনের আড়ম্বর নাই, তব তোমার “স্বৰ্ণলতা” চতথ* বার মুদ্রিত হইতেছে । বাংগালা ভাষায় এখনকার অবস্থায় ইহা সামান্য লাঘার কথা নয়। তাহার উপর ইংরেজী ধরণের প্রণয়-লীলা, চোর ডাকাইতের অভত খেলা, আকস্মিক বিচেছুদ, অভাবনীয় মিলন-এ সকল প্রসঙ্গের ছায়াপাতবজিত হইয়াও যে গ্রন্থ এত আদরের সামগ্রী, তাহার অসাধারণ কোনও গণ আছে, ইহা কৈ না স্বীকার করিবে ? বাসতবিক সবণলতা “সবণলতাই” বটে। মনে করিও না যে, তোমার গ্রন্থের গণগান করিবার জন্যই এ পত্র লিখিতেছি । যে জন্য এ পত্র লিখিতেছি, বলি—“স্বৰ্ণলতা"র যশে তুমি যশস্বী হইয়াছ, বাংগালা সাহিত্যের পরিচয় দিবার জন্য এখন যে সকল বক্তৃতা ও প্রবন্ধাদি প্রকাশিত হইতেছে, তাহাতে এ যশের ঘোষণা দেখিতে পাই, অথচ তুমি কে, তাহা অনেকেই জানেন না। না জানাটা বড় অন্যায় বলিয়া আমার বোধ হইতেছে। প্রথমতঃ ইহাতে পাপিঠের প্রলোভন ; এই সে দিন বগুড়াতে এক ব্যক্তি “সবণ’লতা"র যশোলাভে মুগ্ধ হইয়া আপনাকে গ্রন্থকার পরিচয় দিয়া ধন্টতা প্রকাশ করিয়াছিল । ইহা আমার অসহ্য । দ্বিতীয়তঃ আমার আত্মীয় লোকের মধ্যেও কোনও কোনও ব্যক্তি আমাকে “সবণলতা” লেখক মনে করিয়া থাকেন। এ পরিচয়ে আমি গবিত হইতে পারি বটে, কিন্ত যাহাতে আমার অধিকার নাই, তোমার সে গৌরব চরি করিয়া আমি বড় হইব কেন ? যাঁহাদের এ প্রকার ভ্রম আছে, তাঁহাদের ভ্রম দর করা উচিত। তাই বলিতেছি যে, তুমি আপন সম্পত্তি আপনার করিয়া লও। আমি জানি, তুমি আমার কথা রাখিবে । জানি বলিয়া অনুরোধ করিতেছি যে, সাক্ষাৎ সম্বন্ধে গ্রন্থে নাম যোজনা করিতে তোমার মনে যদি কোনও বিধা হয়, বিজ্ঞাপন স্বরপে আমার এই পত্ৰখানি গ্রন্থারভে মুদ্রিত করিয়া আমার বাসনা পণ করিবে, ইতি । - প্রণয়গবিত বন্ধমান, জ্যৈষ্ঠ, ১২৯০ সাল । শ্ৰীইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্দ্রনাথের উপরোক্ত চিঠি পাওয়ার পর, তারকনাথ ‘সবণলতা’র লেখক হিসেবে নিজের নাম ব্যক্ত করেন । অচিরেই চিকিৎসা-বিজ্ঞানী তারকনাথ ঔপন্যাসিক রপে পরিচিত হয়ে ওঠেন এবং অসাধারণ জনপ্রিয়তা লাভ করেন। বর্ণলতা’র অধিকাংশ চরিত্রই তাঁর নিজের দেখা চরিত্র । উপন্যাসের চরিত্র রচনার ক্ষেত্রে