পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ৬s উপক্ৰম করিতেছে। অমনি ‘বাবা রে, বলিয়া রাস্তার ডান দিকে চলিয়া গেল । বিধ্যভাষণ কহিলেন, “নীলকমল, এ তোমার গা নয়, তোমার গায়ের হাটও নয়, এখানে রাস্তা দেখে না চলে মারা পড়বে। এখাঁন গিয়াছিলে আর কি ?” নীল । দাদাঠাকুর, এখন অবধি আমি তোমার গা ধরে চলবো -এই বলিয়া বিধভষণের হস্ত ধারণ করিলে বিধ কহিলেন, “আমাকে ধরলে লাভের মধ্যে এই যে, তুমিও মারা যাবে, আমিও মারা যাব । তা না করে তুমি আমার পিচু পিচ এস, আর মাঝে মাঝে চারি দিকে চেয়ে দেখ। পাগলের মত এক জিনিসের দিকে ফ্যাল ফ্যাল ক’রে চেয়ে থেকো না ।" বিধভষণ যদিও কখন কলিকাতায় আসেন নাই, কিন্ত কৃষ্ণনগরে সর্বদা তাহার যাতায়াত ছিল এবং তিনি নীলকমলের মত ব্যাকবে নন। সুতরাং তাঁহার পক্ষে কলিকাতা তত নতন বোধ হইল না । নীলকমলকে ডাকিয়া কহিলেন, “নীলকমল, কলিকাতার মধ্যে থাকা ত বড় কট, চল আমরা কালীঘাট যাই, গংগানান করা হবে, কালীদর্শন হবে, আর সেখানে একট, এর চাইতে কম গোলযোগ শুনিছি।" নীলকমলের কলিকাতা দেখিবর জন্যে যত পাহা ছিল, দেখিয়া তাদশ ভঞ্জির উদ্রেক হইল না। চাবকের আঘাতটা এখনও জলিতেছে, সুতরাং কালীঘাটে কম গোলযোগ শুনিয়াই সেখানে যাইতে প্রস্তত হইল । কিন্তু জিজ্ঞাসা করিল, “আচছা দাদাঠাকুর, এখানে লোক কি সুখে থাকে ? চারি দিক থেকে যে গন্ধ বেয়েচে, আর রাস্তায় বেরলে হয় ত চাবক খেতে হয়, নয় গাড়ী চাপা পড়তে হয়।" বিধভাষণ হাসিয়া কহিল, "কলিকাতায় থাকবার ঐ সখ।” “আমি এমন সুখ চাই নে। চল, এখন কালীঘাটে যাই । কিন্ত সেখানে গিয়ে পৌছতে পারলে হয় । ঘোড়গাড়ীর যে হাঙ্গামা ?” বিধ । কালীঘাটে ত যাব, কিন্তু রাস্তা চিনি নে ত, শুনেছি—কালীঘাট এর দক্ষিণ, চল দক্ষিণ মুখে যাই । অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ সুহৃদ্ভেদ কালীঘাটে যাইবেন কৃতসংকল্প হইয়া বিধভাষণ ও নীলকমল দক্ষিণ মুখে চলিতে আরম্ভ করিলেন । ভবানীপরের বাজারে আসিয়া বিধভষেণ বলিলেন, “নীলকমল, এই ত কালীঘাট বোধ হচ্ছে। কাহাকে জিজ্ঞাসা করো দেখি, কালীবাড়ী কোথায় ?” নীলকমল রাস্তার একজন লোককে জিজ্ঞাসা করিল, “কালীবাড়ী কোথায় ?” যাহাকে জিজ্ঞাসা করিল, সে একজন ঢাকাই চালওয়ালা মহাজন । পর্বে দেশে