তিনি তাঁহার বন্ধুরচিত[১] গোপগোপীগণের উত্তর-প্রত্যুত্তর-সূচক ভাবগম্ভীর গীতটিও গাহিয়া শুনাইতেন—
“পরমাত্মন পীতবসন নবঘনশ্যামকায়,
কালা ব্রজের রাখাল ধরে রাধার পায়।
বন্দ প্রাণ নন্দদুলাল নমো নমো পদপঙ্কজে,
মরি মরি মরি বাকানয়ন গোপীর মন মজে।
পাণ্ডবসখা সারথি রথে, বাঁশী বাজায় ব্রজের ঘাটে পথে।
যজ্ঞেশ্বর বীতভয় হর যাদবরায়,
প্রেমে রাধা ব’লে নয়ন ভেসে যায়।”
এমন একটি দিন (৯ই মে) কখনই ভুলিবার নহে। তরুতলে বসিয়া আমরা কথাবার্ত্তা কহিতেছিলাম, এমন সময় সহসা ঝড় আসিল। আমরা প্রথমে নদীর তীরে পোস্তায় ও পরে বারান্দায় উঠিয়া গেলাম। আর এক মুহূর্ত্তও বিলম্ব করা চলিত না। দশ মিনিটের মধ্যে গঙ্গার অপর পার আর দেখা গেল না। চতুর্দিক অন্ধকারাচ্ছন্ন হইল। শুধু মুষলধারে বৃষ্টি ও বজ্রপতন-শব্দ শুনিতে পাইতেছিলাম, আর থাকিয়া থাকিয়া ঘোর বিদ্যুৎ চমকাইতেছিল।
তথাপি বাহ্য প্রকৃতির এই সকল আলোড়নের মধ্যে আমাদের ছোট বারান্দাটিতে বসিয়া বসিয়া আমরা ইহার চেয়ে ও এক গভীরতর অভিনয় তন্ময়ভাবে দেখিতেছিলাম। আমাদের ক্ষুদ্র রঙ্গমঞ্চের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্য্যন্ত একমাত্র অভিনেতা
- ↑ পরলোকগত নাট্যাচার্য্য গিরিশচন্দ্র ঘোষ।
১০