পাতা:স্বামি শিষ্য সংবাদ (পূর্ব কাণ্ড).djvu/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰথম বল্পী । নরেন্দ্ৰবাবুজিজ্ঞাসা করিলেন-“এই আদান প্ৰদানে আমাদের রাজনৈতিক কোন উন্নতির আশা আছে কি ?” স্বামিজী বলিলেন--“ওরা (পাশ্চাত্যের") মহাপরাক্রান্ত বিরোচনের সন্তানী ; ওদের শক্তিতে পঞ্চভূত ক্রীড়াপুত্তলিকাবৎ হইয়া কাৰ্য্য করিতেছে ; আপনারা যদি মনে করেন-- আমরা এদের সঙ্গে সংঘর্ষে ঐ স্কুল পাঞ্চভৌতিক শক্তি প্রয়োগ করিয়াই একৃদিন স্বাধীন হইব। তবে আপনারা নেহাৎ ভুল বুঝিতেছেন। হিমালয়ের সামন্ত্র, সামান্য উপলখণ্ড যেরূপ, উহাদের ও আমাদের ঐ শক্তি-প্রয়োগকুশলতায় তদ্রুপ প্ৰভেদ । আমার মত কি জানেন ?- আমরা এইরূপে বেদান্তোক্ত ধৰ্ম্মের গৃঢ় রহস্য পাশ্চাত্য জগতে প্রচার করিয়া, ঐ মহাশক্তিধরগণের শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি আকর্ষণ কয়িয়া, ধৰ্ম্ম বিষয়ে চিরদিন ওদের গুরুস্থানীয় থাকিব এবং ওরা ইহলৌকিক অন্যান্য বিষয়ে আমাদের গুরু থাকিবে । ধৰ্ম্ম জিনিসটা ওদের হাতে ছেড়ে দিয়ে ভারতবাসী যেদিন পাশ্চাত্যের পদতলে ধৰ্ম্ম শিখতে বসবে সেইদিন এ অধঃপতিত জাতির জাতিত্ব একেবারে ঘুচে যাবে। দিনরাত চীৎকার করে ওদের “এ দেও’ ‘ও দেও’ বললে কিছু হবে না। এই আদান-প্ৰদান-রূপ কাৰ্য্য দ্বারা যখন উভয়পক্ষের ভিতর শ্ৰদ্ধা ও সহানুভূতির একটা টান দাড়াবে তখন আর চেচামেচি করতে হবে না। ওরা আপনা হতেই সব করবে। আমার বিশ্বাসএইরূপে ধৰ্ম্মের চর্চায় ও বেদান্ত ধৰ্ম্মের বহুল প্রচারে এদেশ ও পাশ্চাত্য দেশ উভয়েরই বিশেষ লাভ। রাজনীতিচর্চা এর তুলনায় আমার নিকট গৌণ ( Secondary ) উপায় বলিয়া বোধ হয়। আমি এই বিশ্বাস কাৰ্য্যে পরিণত করিতে জীবন ক্ষয় করবো।