পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুস্তকোঃম্ বক্তৃতা ty-$ সংস্বভাব । আর তোমরাই চিরকাল অত্যাচারে প্রপীড়িত হইয়াছ—এই মায়াময় জগতে ইহাই মহা প্রহেলিকা । তাহা হউক, তোমরা উহা গ্রাহ করিও না— পরিণামে আধ্যাত্মিকতার জয় হইবেই হইবে। ইত্যবসরে আমাদিগকে কার্য করিতে হইবে, কেবল দেশবাসীর নিন্দা করিলে চলিবে না । আমাদের এই পরম পবিত্র মাতৃভূমির কালজীৰ্ণ আচার ও প্রথাসকলের নিন্দ করিও না ; অতি কুসংস্কারপুর্ণ ও অযৌক্তিক প্রথাগুলির বিরুদ্ধেও একটি নিন্দাস্বচক কথা বলিও না, কারণ সেগুলি দ্বারাও অতীতে আমাদের কিছু ন কিছু কল্যাণ সাধিত হইয়াছে। সর্বদ মনে রাখিও, আমাদের সামাজিক প্রথাগুলির উদেশ্ব যেরূপ মহং, পুথিবীর আর কোন দেশের প্রথাই সেরূপ মহে । আমি পুথিবীর প্রায় সর্বত্রই জাতিভেদ দেখিয়াছি, কিন্তু এখানে উদ্দেশ্য যেরূপ মহৎ, অন্ত কোথাও সেরূপ নহে। অতএব যখন জাতিভেদ অনিবার্য, তখন অর্থগত জাতিভেদ অপেক্ষা পবিত্রতাসাধন ও আত্মত্যাগের উপর প্রতিষ্ঠিত জাতিভেদ বরং ভাল বলিতে হইবে । অতএব নিন্দাবাদ একেবারে পরিত্যাগ কর । তোমাদের মুখ বন্ধ হউক, হৃদয় খুলিয়া যাক । এই দেশের এবং সমগ্র জগতের উদ্ধারসাধন কর । তোমাদের প্রত্যেককেই ভাবিতে হইবে যে, সমুদয় ভার তোমারই উপর । বেদান্তের আলোক প্রতি গৃহে লইয়া যাও, প্রতি গৃহে বেদান্তের আদর্শ অস্থায়ী জীবন গঠিত হউক—প্রত্যেক জীবাত্মায় যে ঈশ্বরত্ব অস্তনিহিত রহিয়াছে, তাহা জাগ্রত কর । তাহা হইলেই—তোমার সফলতার পরিমাণ যতটুকুই হউক না কেন—তোমার মনে এই শস্তোষ আসিবে যে, তুমি মহংকার্যের জন্য জীবনধাপন করিয়াছ এবং মহংকার্যে প্রাণ দিয়াছ । যেরূপেই হউক, এই মহৎকার্য সাধিত হইলেই ইহলোকে মানবজাতির কল্যাণ হইবে ।