পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার সুমরনীতি So o লক্ষ্যে পৌছিবেল-ইহাই তাহাদের মূল মত। সুতরাং এই সোপানগুলি সবই আবশ্বক এবং আমাদের সহায়ক। কে এই সোপানগুলিকে নিন্দ করিতে সাহসী হইবে ? আজকাল একটি কথা চালু হইয়া গিয়াছে, এবং সকলেই বিনা আপত্তিতে এটি স্বীকার করিয়া থাকেন যে, পৌত্তলিকতা অন্যায় । আমিও এক সময়ে এইরূপ ভাবিতাম, এবং ইহার শাস্তিস্বরূপ আমাকে এমন এক জনের পদতলে বসিয়া শিক্ষালাভ করিতে হইয়াছিল, যিনি পুতুলপূজা হইতে সব পাইয়াছিলেন। আমি রামকৃষ্ণ পরমহংসের কথা বলিতেছি। হিন্দুগণ, যদি পুতুলপূজা করিয়া এইরূপ রামকৃষ্ণ পরমহংসের আবির্ভাব হয়, তবে তোমরা কি চাও ?— ংস্কারকগণের ধর্ম চাও, না পুতুলপূজা চাও? আমি ইহার একটা উত্তর চাই। যদি পুতুলপুজা দ্বারা এইরূপ রামকৃষ্ণ পরমহংস স্বষ্টি করিতে পারে, তবে আরও হাজার পুতুলের পূজা কর । ঈশ্বরেচ্ছায় তোমরা সাফল্য লাভ কর। যে কোন উপায়ে হউক, এইরূপ মহান চরিত্র স্বষ্টি কর । আর পুতুলপুজাকে লোকে গালি দেয় । কেন ?—তাহ কেহই জানে না । কারণ কয়েক সহস্ৰ বৎসর পুর্বে জনৈক য়াহুদী-বংশসস্তৃত ব্যক্তি পুতুলপুজাকে নিন্দ করিয়াছিলেন অর্থাৎ তিনি নিজের পুতুল ছাড়া আর সকলের পুতুলকে নিন্দ করিয়াছিলেন । সেই য়াহুদী বলিয়াছিলেন, যদি কোন বিশেষ ভাব-প্রকাশক বা পরমসুন্দর মূর্তি দ্বারা ঈশ্বরের ভাব প্রকাশ করা হয়, তবে তাহা ভয়ানক দোষ, মহা পাপ ; কিন্তু যদি একটি সিন্দুকের দুইধারে দুইজন দেবদূত, তাহার উপরে মেঘ—এইরূপে ঈশ্বন্ধের ভাব প্রকাশ করা হয়, তবে তাহা মহা পবিত্র । ঈশ্বর যদি ঘুঘুর রূপ ধারণ করিয়া আসেন, তবে তাহা মহা পবিত্র ; কিন্তু যদি . ਚਿਕਿ গাভীর রূপ ধারণ করিয়া আসেন, তবে তাহা হিদেনদের কুসংস্কার ! অতএব উহাকে নিন্দ কর । দুনিয়া এইভাবেই চলিয়াছে। তাই কবি বলিয়াছেন, “আমরা মর্ত্যমানব কি নিবোধ !’ পরের চক্ষে দেখা ও বিচার করা কি কঠিন ব্যাপার! আর ইহাই মনুষ্যসমাজের উন্নতির অস্তুরায়ুস্বরূপ । ইহাই ঈর্ষা ঘৃণা বিবাদ ও স্বন্ধের মূল। বালকুগণ, অর্বাচীন শিশুগণ, তোমরা মাত্রাজের বাহিরে কখনও যাও নাই; তোমরা সহস্ৰ সহস্র প্রাচীন-সংস্কার-নিয়ন্ত্রিত ত্রিশকোটি লোকের উপর আইন চালাইতে চাও-তোমাদের লক্ষ করে না ? এরূপ বিষম দোষ