পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& 〉や স্বামীজীর বাণী ও রচনা তোমরা আমা অপেক্ষ কত অধিক কাজ করিতে পারে। উঠ—জাগো, জগৎ তোমাদিগকে আহবান করিতেছে। ভারতের অন্যান্য স্থানে বুদ্ধিবল আছে, ধনবল আছে, কিন্তু কেবল আমার মাতৃভূমিতেই উৎসাহাগ্নি বিদ্যমান। ‘હફ উৎসাহাগ্নি প্ৰজলিত কবিতে হইবে ; অতএব হে কলিকাতাবাসী যুবকগণ ! হৃদয়ে এই উৎসাহের আগুন জালিয়া জাগরিত হও । , ভাবিও না তোমরা দরিদ্র, ভাবিও না তোমরা বন্ধুহীন ; কে কোথায় দেখিয়াছ—টীকায় মানুষ করিয়াছে ? মানুষই চিরকাল টাকা করিয়া থাকে । জগতের যাহা কিছু উন্নতি, সব মানুষের শক্তিতে হইয়াছে, উৎসাহের শক্তিতে হইয়াছে, বিশ্বাসের শক্তিতে হইয়াছে । তোমাদের মধ্যে যাহারা উপনিষদগুলির মধ্যে মনোরম কঠোপনিষৎ পাঠ করিয়াছ, তাহদের অবশুই স্মরণ আছে : এক রাজগ্নি এক মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়া ভাল ভাল জিনিস দক্ষিণ না দিয়া অতি বুদ্ধ, কার্যের অনুপযুক্ত কতকগুলি গাভী দক্ষিণ দিতেছিলেন । " সেই সময় তাহার পুত্ৰ নচিকেতার হৃদয়ে শ্রদ্ধা প্রবেশ করিল। এই ‘শ্রদ্ধা’ শব্দ আমি তোমাদের নিকট ইংরেজীতে অনুবাদ করিয়া বলিব না ; অতুবাদ করিলে ভুল হইবে । এই অপূর্ব শব্দের প্রকৃত তাৎপর্য বুঝা কঠিন ; এই শব্দের প্রভাব ও কার্যকারিতা অতি বিস্ময়কর । নচিকেতার হৃদয়ে শ্রদ্ধা জাগিবা মাত্র কি ফল হইল, দেখ। শ্রদ্ধা জাগিবামাত্রই নচিকেতার মনে হইল—আমি অনেকের মধ্যে প্রথম, অনেকের মধ্যে মধ্যম : অধম আমি কখনই নহি ; আমিও কিছু কার্য করিতে পারি। তাহার এইরূপ আত্মবিশ্বাস ও সাহস বাড়িতে লাগিল, তখন ষে-সমস্তার চিন্তায় তাহার মন আলোড়িত হইতেছিল, তিনি সেই মৃত্যুতত্বের মীমাংসা করিতে উদ্যত হইলেন ; যমগৃহে গমন ব্যতীত এই সমস্যার মীমাংসা হইবুরি অন্য উপায় ছিল না, স্বতরাং তিনি যম-সদনে গমন করিলেন। সেই নিৰ্ভীক বালক নচিকেতা যমগৃহে তিন দিন অপেক্ষা করিলেন । তোমরা জানো, কিরূপে তিনি যমের নিকট হইতে সমুদয় তত্ত্ব অবগত হইলেন। আমাদের চাই এই শ্রদ্ধা । দুর্ভাগ্যক্রমে ভারত হইতে এই শ্রদ্ধা প্রায় অন্তৰ্হিত হইয়াছে। সেজন্যই আমাদের এই বর্তমান দুর্দশা । মামুষে মানুষে প্রভেদ এই শ্রদ্ধার তারতম্য লইয়া, আর কিছুতেই নহে । এই শ্রদ্ধার তারতম্যেই কেহ বড় হয়, কেহ ছোট হয়। আমার গুরুদেব বলিতেন, যে আপনাকে দুর্বল ভাবে, সে দুর্বলই হইবে—ইহা অতি সত্য কথা। এই শ্রদ্ধা তোমাদের ভিতর প্রবেশ