পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

18ు ఫి স্বামীজীর বাণী ও রচনা একটি স্বপক সরস সুমিষ্ট আম পাড়িয়া'লও, তবেই তুমি আমের সকল তত্ব অবগত হইবে। এইভাবে এই ঈশ্বরকল্প মানবগণই হিন্দুধর্ম কি, তাহ প্রকাশ করেন ৭ এই জাতি শতাব্দী দ্বারা কুষ্টির পরিমাপ করে, যে জাতিরূপ বৃক্ষ সহস্র বর্ষ ধরিয়া ঝঞ্চবাত সহ করিয়াও অনন্ত তারুণ্যের অক্ষয় তেজে এখনও গৌরবান্বিত হইয়া দণ্ডায়মান রহিয়াছে, এই দেবমানবদের জীবন দেখিলেই সেই জাতির স্বরূপ, শক্তি ও সম্ভাবনার বিষয় জানা যায় । - ভারত কি মরিয়া যাইবে ? তাহা হইলে জগৎ হইতে সমুদয় আধ্যাত্মিকতা বিলুপ্ত হইবে ; চরিত্রের মহান আদৰ্শসকল বিলুপ্ত হইবে, সমুদয় ধর্মের প্রতি মধুর সহানুভূতির ভাব বিলুপ্ত হইবে, সমুদয় ভাবুকতা বিলুপ্ত হইবে ; তাহার স্থলে দেবদেবীরূপে কাম ও বিলাসিত যুগ্ম রাজত্ব চালাইবে ; অর্থ—সে পুজার পুরোহিত ; প্রতারণা, পাশববল ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা–তাহার পূজাপদ্ধতি আর মানবাত্মা তাহার বলি। এ অবস্থা কখন হইতে পারে না । কর্মশক্তি হইতে সহাশক্তি অনন্তগুণে শ্রেষ্ঠ । ঘূণাশক্তি হইতে প্রেমশক্তি অনন্তগুণে অধিক শক্তিমান । যাহারা মনে করেন হিন্দুধর্মের বর্তমান পুনরুখান কেবল দেশহিতৈষিতা-প্রবৃত্তির একটি বিকাশমাত্র, তাহারা ভ্রান্ত । প্রথমতঃ আস্থন, এই অপুর্ব ব্যাপার কি, তাহা আমরা বুঝিবার চেষ্টা করি । ইহা কি আশ্চর্য নয় যে, একদিকে যেমন আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রবল আক্রমণে পাশ্চাত্য গোড়া ধর্মগুলির প্রাচীন দুর্গসমূহ ধূলিসাৎ হইতেছে, একদিকে যেমন বর্তমান বিজ্ঞানের হাতুড়ির আঘাত—বিশ্বাস অথবা চার্চসমিতির সংখ্যাধিক্যের সম্মতিই যাহার মূল, সেই-সকল ধর্মমতরূপ কাচপাত্রকে চূর্ণবিচূর্ণ করিয়া ফেলিতেছে, একদিকে যেমন আক্রমণশীল আধুনিক চিন্তার ক্রমবর্ধমান । স্রোতের সহিত নিজেদের মিলাইতে গিয়া পাশ্চাত্য ধর্মমতসকল কিংকর্তব্যবিমূঢ় হইয়া পড়িতেছে, একদিকে যেমন অপর সমুদয় ধর্মপুস্তকের মূলগ্রন্থগুলি হইতে আধুনিক চিন্তার ক্রমবর্ধমান তাড়নায় যথাসম্ভব বিস্তৃত ও উদার অর্থ বাহির করিমুত হইয়াছে, আর তাহদের অধিকাংশই ঐ চাপে ভগ্ন হইয়া অপ্রয়োজনীয় . ত্রব্যের ভাণ্ডারে রক্ষিত হইয়াছে, একদিকে যেমন অধিকাংশ পাশ্চাত্য চিন্তাশীল ব্যক্তি চার্চের সঙ্গে সমুদয় সংস্রব পরিত্যাগ করিয়া অশাস্তিসাগরে ভাসিতেছেন, অপর দিকে তেমনি যে-সকল ধর্ম সেই বেদরূপ জ্ঞানের মূলপ্রস্রবণ হইতে প্রাণপ্ৰদ