পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ф о স্বামীজীর বাণী ও রচনা - & দিকে গতি একবার আরম্ভ হইলে বিভিন্ন প্রকার শত শত বিষয়ে একচেটিয়া দাবি আরম্ভ হয়। ক্রমশঃ এমন সময় আসে, যখন সমগ্র জাতির শুধু আধ্যাত্মিক ক্ষমতাগুলি নয়, সর্বপ্রকার লৌকিক ক্ষমতা ও অধিকারগুলি অল্পসংখ্যক কয়েকটি ব্যক্তির করায়ত্ত হয়। এই অল্পসংখ্যক লোক সৰ্বসাধারণের ঘাড়ে চড়িয়া তাহাদের উপর প্রভূত্ব বিস্তার করে। তখন সমাজকে আত্মরক্ষায় সচেষ্ট হইতে হয় । এই সময় জড়বাদ দ্বারা বিশেষ সাহায্য হইয় থাকে। " যদি আপনার আমাদের মাতৃভূমি ভারতের দিকে দৃষ্টিপাত করেন, দেখিবেন এখানে এখন সেই ব্যাপারই ঘটিতেছে । ইওরোপে আপনাদের ধর্ম প্রচারের জন্য একজন গিয়াছিলেন ; আজ যে আপনারা তাহার অভ্যর্থনার জন্য সমবেত হইয়াছেন, ইহা অসম্ভব হইত, যদি ন! ইওরোপীয় জড়বাদ ইহার পথ করিয়া দিত। স্বতরাং এক হিসাবে জড়বাদ যথার্থই ভারতের কিছু কল্যাণ সাধন করিয়াছে, উহা সকলেরই উন্নতির দ্বার খুলিয়া দিয়াছে, "উচ্চ বর্ণের একচেটিয়া অধিকার দূর করিয়া দিয়াছে—অতি অল্পসংখ্যক ব্যক্তির নিকট যে-অমূল্য রত্ব গুপ্তভাবে ছিল এবং যাহার ব্যবহার তাহারা নিজেরাও ভুলিয়া গিয়াছিল, তাহ সর্বসাধারণের নিকট উন্মুক্ত করিয়া দিয়াছে। ঐ অমূল্য রত্বের অর্ধভাগ নষ্ট হইয়া গিয়াছে, অপরাধ এমন সব লোকের হাতে আছে, যাহারা গরুর জাবপাত্রে শয়ান সেই কুকুরের মতো নিজেরাও খাইবে না, অপরকেও খাইতে দিবে না ! ... " অপর দিকে আবার আমরা ভারতে যে-সকল রাজনীতিক অধিকার-লাভের চেষ্টা করিতেছি, সেগুলি ইওরোপে যুগ যুগ ধরিয় রহিয়াছে, শত শতাব্দী ধরিয়া ঐগুলি পরীক্ষিত হইয়াছে ; আর সেগুলি যে সামাজিক প্রয়োজন-সাধনে অমর্থ তাহাও প্রতিপন্ন হইয়াছে। ইওরোপের রাজনীতিক প্রশাসনিক প্রণালীগুলি এক এক করিয়া অনুপযোগী বলিয়া নিন্দিত হইয়াছে, আর এখন ' ইওরোপ অশাস্তি-সাগরে ভাসিতেছে—কি করিবে, কোথায় যাইবে বুঝিতে পারিতেছে না। ঐহিক ব্যাপারে অত্যাচার প্রচণ্ড হইয়া দাড়াইয়াছে। দেশের সব ধন, সব ক্ষমতা অল্পসংখ্যক কয়েকটি লোকের হাতে ; তাহারা নিজেরা কোন কাজ করে না, কিন্তু লক্ষ লক্ষ নরনারী দ্বারা কাজ করাষ্ট্রয়া লইবার ক্ষমতা রাখে । এই ক্ষমতাবলে তাহারা সমগ্র পৃথিবী রক্তস্রোতে প্লাবিত করিতে পারে। ধর্ম ও অন্যান্য যাহা কিছু, সবই তাহাদের পদতলে । তাহারাই