পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য יריל ל গরমদেশে কাপড়ের দরকার হয় না। কৌপীনমাত্রেই লজ্জানিবারণ, বাকি কেবল অলঙ্কার । ঠাণ্ড দেশে শীতের চোটে অস্থির, অসভ্য অবস্থায় জানোয়ারের ছাল টেনে পরে, ক্রমে কম্বল পরে, ক্রমে জামা-পাজামা ইত্যাদি নানানখানা হয়। তারপর আছড় গায়ে গয়না পরতে গেলেই তো ঠাণ্ডায় মৃত্যু, কাজেই অলঙ্কার-প্রিয়তাটা ঐ কাপড়ের উপর গিয়ে পড়ে। যেমন আমাদের দেশে গয়নার ফ্যাশন বদলায়, এদের তেমনি ঘড়ি ঘড়ি বদলাচ্ছে কাপড়ের ফ্যাশন । ঠাণ্ড দেশমাত্রেই এজন্য সর্বদা সর্বাঙ্গ না ঢেকে কারু সামনে বেরুবার জো নেই। বিলেতে ঠিক ঠিক পোশাকটি না পরে ঘরের বাইরে যাবার জো নেই। পাশ্চাত্য দেশের মেয়েদের পা দেখানো বড়ই লজ্জা, কিন্তু গলা ও বুকের খানিকট দেখানো যেতে পারে। আমাদের দেশে মুখ দেখানো বড়ই লজ্জ ; কিন্তু সে ঘোমটা টানার চোটে শাড়ি কোমরে ওঠেন উঠন, তায় দোষ নেই। রাজপুতানার ও হিমাচলের অষ্টাঙ্গ ঢেকে তলপেট দেখানো! পাশ্চাত্য দেশের নর্তকী ও বেশ্বারা লোক ভুলাবার জন্য অনাচ্ছাদিত । এদের নাচের মানে, তাঁলে তালে শরীর অনাবৃত করে দেখানে । আমাদের দেশের আতুড় গা ভদ্রলোকের মেয়ের ; নর্তকী বেশ্ব সর্বাঙ্গ ঢাকা । পাশ্চাত্য দেশে মেয়েছেলে সর্বদাই গা ঢাকা, গা আদুড় করলে আকর্ষণ বেশী হয় ; আমাদের দেশে দিনরাত অাদুড় গা, পোশাক প’রে ঢেকেঢুকে থাকলেই আকর্ষণ অধিক । মালাবার দেশে মেয়ে-মদের কেীপীনের উপর বহির্বাসমাত্র, আর বস্ত্রমাত্রই নেই। বাঙালীরও তাই, তবে কেীপীন নাই এবং পুরুষদের সাক্ষাতে মেয়েরা গা-টা মুড়ি-ঝুড়ি দিয়ে ঢাকে। পাশ্চাত্য দেশে পুরুষে পুরুষে সর্বাঙ্গ অক্লেশে উলঙ্গ হয়—আমাদের মেয়েদের মতো ! বাপ ছেলেয় সর্বাঙ্গ উলঙ্গ ক’রে স্নানাদি করে, দোষ নাই। কিন্তু মেয়েদের সামনে, বা রাস্তা-ঘাটে, বা নিজের ঘর ছাড়া—সর্বাঙ্গ ঢাকা চাই । এক চীনে ছাড়া সর্বদেশেই এ লজ্জা সম্বন্ধে অনেক অদ্ভুত বিষয় দেখছি— কোন বিষয়ে বেজায় লজ্জা, আবার তদপেক্ষ অধিক লজ্জাকর বিষয়ে আদতে লজ্জা নেই। চীনে মেয়ে-মন্দে সর্বদা আপাদমস্তক ঢাকা । চীনে কনফুছের চেলা, বুদ্ধের চেলা, বড় নীতি-দুরন্ত ; খারাপ কথা, চাল, চলন— . তৎক্ষণাৎ সাজা। ক্রিস্টান পাস্ত্রী গিয়ে চীনে ভাষায় বাইবেল ছাপিয়ে