পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্তমান ভারত २३ १ মুসলমানের নিকট সম্যক ঘৃণ্য নহে, তাহারা অল্পবিশ্বাসী মাত্র ; কিন্তু কাফেরমূর্তিপূজাকারী হিন্দু এ জীবনে বলিদান ও অস্তে অনন্ত নরকের ভাগী। সেই কাফেরের ধর্মগুরুদিগকে—পুরোহিতবর্গকে—দয়া করিয়া কোনও প্রকারে জীবনধারণ করিতে আজ্ঞামাত্র মুসলমান রাজা দিতে পারেন, তাহাও কখন কখন ; নতুবা রাজার ধর্মানুরাগ একটু বৃদ্ধি হইলেই কাফের হত্যারূপ মহাযজ্ঞের আয়োজন ! এক দিকে রাজশক্তি ভিন্নধর্মী ভিন্নাচারী প্রবল রাজগণে সঞ্চারিত ; অপর দিকে পৌরোহিত্যশক্তি সমাজ-শাসনাধিকার হইতে সর্বতোভাবে বিচু্যত । মম্বাদি ধর্মশাস্ত্রের স্থানে কোরানোক্ত দণ্ডনীতি, সংস্কৃত ভাষার স্থানে পারসী আরবী । সংস্কৃত ভাষা বিজিত ঘৃণিত হিন্দুদের ধর্মমাত্র-প্রয়োজন রহিল, অতএব পুরোহিতের হস্তে যথাকথঞ্চিৎ প্রাণধারণ করিতে লাগিল, আর ব্রাহ্মণ্যশক্তি বিবাহাদি রীতিনীতি-পরিচালনেই আপনার দুরাকাজক্ষণ চরিতার্থ করিতে রহিল, তাহাও যতক্ষণ মুসলমান রাজার দয়া। বৈদিক ও তাহার সন্নিহিত উত্তরকালে পৌরোহিত্যশক্তির পেষণে রাজশক্তির স্ফূর্তি হয় নাই। “ বৌদ্ধবিপ্লবের পর ব্রাহ্মণ্যশক্তির বিনাশের সঙ্গে সঙ্গে ভারতের রাজশক্তির সম্পূর্ণ বিকাশ আমরা দেখিয়াছি। বৌদ্ধ সাম্রাজ্যের বিনাশ ও মুসলমান সাম্রাজ্য-স্থাপন—এই দুই কালের মধ্যে রাজপুত জাতির দ্বারা রাজশক্তির পুনরুদ্ভাবনের চেষ্ট যে বিফল হইয়াছিল তাহারও কারণ পৌরোহিত্যশক্তির নবজীবনের চেষ্টা । পদদলিত-পৌরোহিত্যশক্তি মুসলমান রাজা বহু পরিমাণে মৌর্য, গুপ্ত, আন্ধ, ক্ষত্রিপাদি , সম্রাড় বর্গের গৌরবত্র পুনরুদ্ভাসিত করিতে সক্ষম হইয়াছিল । এই প্রকারে কুমারিল্প হইতে শ্ৰীশঙ্কর ও শ্রীরামানুজাদিপরিচালিত, রাজপুতাদি বাহু, জৈনবৌদ্ধ-রুধিরাক্তকলেবর, পুনরভূখানেচ্ছু ভারতের পৌরোহিত্যশক্তি মুসলমানাধিকার-যুগে চিরদিনের মতো প্রস্বগু রহিল, যুদ্ধবিগ্রহ, প্রতিদ্বন্দ্বিতা এ যুগে কেবল রাজায় রাজায়। এ যুগের শেষে যখন ১ (ইসলামে ) অবিশ্বাসী ২ ক্ষত্রিপ-আর্যাবর্ত ও গুজরাটের পারস্তদেশীয় সম্রাড়গণ ( Satraps )