পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিন্দুধর্ম ও শ্রীরামকৃষ্ণ [এই প্রবন্ধটি "হিন্দুধর্ম কি ?’ নামে ১৩০৪ সালে ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণদেবের পঞ্চযষ্টিতম জন্মোৎসবের সময় পুস্তিকাকারে প্রথম প্রকাশিত হয়। ] শাস্ত্র শব্দে অনাদি অনন্ত ‘বেদ’ বুঝা যায়। ধর্মশাসনে এই বেদই একমাত্র সক্ষম । পুরাণাদি অন্যান্য পুস্তক স্মৃতিশব্দবাচ্য ; এবং তাহদের প্রামাণ্য—যে পর্যন্ত তাহারা শ্রুতিকে অনুসরণ করে, সেই পর্যন্ত । ‘সত্য দুই প্রকার। এক—যাহা মানব-সাধারণের পঞ্চেন্দ্রিয়-গ্রাহ ও তদুপস্থাপিত অনুমানের দ্বারা গ্রাহ । দুই—যাহা অতীন্দ্রিয় সূক্ষ্ম যোগজ শক্তির গ্রাহা । প্রথম উপায় দ্বারা সঙ্কলিত জ্ঞানকে ‘বিজ্ঞান’ বলা যায়। দ্বিতীয় প্রকারের সঙ্কলিত জ্ঞানকে ‘বেদ’ বলা যায় । : ‘বেদ’-নামধেয় অনাদি অনন্ত অলৌকিক জ্ঞানরাশি সদা বিদ্যমান, স্বষ্টিকর্তা স্বয়ং যাহার সহায়তায় এই জগতের স্বষ্টি-স্থিতি-প্রলয় করিতেছেন। এই অতীন্দ্রিয় শক্তি যে পুরুষে আবির্ভূত হন, তাহার নাম ঋষি, ও সেই শক্তির দ্বারা তিনি যে অলৌকিক সত্য উপলব্ধি করেন, তাহার নাম ‘বেদ’ । এই ঋষিত্ব ও বেদগ্ৰন্থত্ব লাভ করাই যথার্থ ধর্মানুভূতি। যতদিন ইহার উন্মেষ না হয়, ততদিন ‘ধৰ্ম কেবল 'কথার কথা’ ও ধর্মরাজ্যের প্রথম সোপানেও পদস্থিতি হয় নাই, জানিতে হইবে। - সমস্ত দেশ-কাল-পাত্র ব্যাপিয়া বেদের শাসন অর্থাৎ বেদের প্রভাব দেশবিশেষে, কালবিশেষে বা পাত্রবিশেষে বদ্ধ নহে। সার্বজনীন ধর্মের ব্যাখ্যাত একমাত্র ‘বেদ’ । অলৌকিক জ্ঞানবেত্ত্বত্ব কিঞ্চিং পরিমাণে অস্মদেশীয় ইতিহাস-পুরাণাদি পুস্তকে ও মেচ্ছাদিদেশীয় ধর্মপুস্তকসমূহে যদিও বর্তমান, তথাপি অলৌকিক জ্ঞানরাশির সর্বপ্রথম সম্পূর্ণ এবং অবিকৃত সংগ্রহ বলিয়া আর্যজাতির মধ্যে প্রসিদ্ধ ‘বেদ’-নামধেয় চতুৰ্বিভক্ত অক্ষররাশি সর্বতোভাবে সর্বোচ্চ স্থানের