পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঈশ-অমুসরণ &> দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ আপনার জ্ঞান সম্বন্ধে হীনভাব ১ । সকলেই স্বভাবতঃ জ্ঞানলাভের ইচ্ছা করে, কিন্তু ঈশ্বরের ভয় না থাকিলে সে জ্ঞানে লাভ কি ? আপনার আত্মার কল্যাণচিন্ত পরিত্যাগ করিয়। যিনি নক্ষত্রমণ্ডলীর গতি-বিধি পর্যালোচনা করিতে ব্যস্ত, সেই গর্বিত পণ্ডিত অপেক্ষ কি—যে দীন কৃষক বিনীতভাবে ঈশ্বরের সেবা করে, সে নিশ্চয়ই শ্রেষ্ঠ নহে ? যিনি আপনাকে উত্তমরূপে জানিয়াছেন, তিনিই আপনার চক্ষে আপনি অতি হীন এবং তিনি মনুৰ্য্যের প্রশংসাতে অণুমাত্রও আনন্দিত হইতে পারেন না। যদি আমি জগতের সমস্ত বিষয়ই জানি, কিন্তু আমার নিঃস্বর্থ সহানুভূতি না থাকে, তাহা হইলে যে ঈশ্বর আমার কর্মানুসারে আমার বিচার করিবেন, তাহার সমক্ষে আমার জ্ঞান কোন উপকারে আসিবে ? । অত্যন্ত জ্ঞান-লালসকে পরিত্যাগ কর, কারণ তাহা হইতে অত্যন্ত চিত্তবিক্ষেপ ও ভ্রম আগমন করে । পণ্ডিত হইলেই বিদ্যা প্রকাশ করিতে এবং প্রতিভাশালী বলিয়। কথিত হইতে বাসনা হয় । এ প্রকার অনেক বিষয় আছে, যদ্বিষয়ক জ্ঞান আধ্যাত্মিক কোন উপকারে আইসে না এবং তিনি অতি মূখ, যিনি যে-সকল বিষয় তাহার পরিত্রাণের সহায়তা করিবে, তাহ পরিত্যাগ করিয়া এই সকল বিষয়ে মন নিবিষ্ট করেন । বহু বাক্যে অত্ত্বি তৃপ্ত হয় না, পরন্তু সাধুজীবন অন্তঃকরণে শান্তি প্রদান করে এবং পবিত্র বুদ্ধি ঈশ্বরে সমধিক নির্ভর স্থাপিত করে। t ৩ । তোমার জ্ঞান এবং ধারণশক্তি যে পরিমাণে অধিক, তোমার তত কঠিন বিচার হইবে, যদি সমধিক জ্ঞানের ফলস্বরূপ তোমার জীবনও সমধিক পবিত্র না হয় । অতএব, তোমার দক্ষতা এবং বিদ্যার জন্য বহুপ্রশংসিত হইতে ইচ্ছা করিও না ; বরং যে জ্ঞান তোমাকে প্রদত্ত হইয়াছে, তাহাকে ভয়ের কারণ বলিয়া জান ।