পাতা:স্মৃতির রেখা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখে বসে বসে মনে হ’ল যেন সৃষ্টির আদিম যুগের এক জলার ধারে বসে আছি। যে জলার ধারের বনগাছ এখন প্রস্তরীভূত হয়ে পাথুরে কয়লায় রূপান্তরিত হয়েছে--সেই পঞ্চাশ ষাট লক্ষ বা কোটি বৎসর আগেকার এক প্ৰাচীন আদিম পৃথিবীর জলার ধারে...চারধারের গাছপালাগুলো আদিম ধরনের ”Tiwfff*I* of Koi 77ti · · · Stigmaria, Sigiloria, Lepidodendren longifoliuna ইত্যাদি । পৃথিবী জনহীন, মনুষ্য সৃষ্টির বহু বহু পূর্বের পৃথিবী এ। আদিম গহনা গভীর অন্ধকার অরণ্যে শুধু আদিম যুগের অতিকায় অধুনালুপ্ত Naurianরা ঘুরে বেডাচ্ছে। পাখী নেই, ফুল নেই, মানুষ নেই, সৃষ্টির কোনো সৌন্দৰ্য্য নেই আকাশে, অথচ প্ৰতিদিন সুন্দব সোনার সুয্যাস্ত হচ্ছে। প্রতি রাত্রে রূপোলী চাদের আলোর ঢেউ আদিম অরণ্য। আর জলার বুকে বেধে যাচ্ছে । দেখবার (কর্ড নেই, বুঝবার কেউ নেই। কতদিন পরে মানুষ আসবে, পৃথিবী যেন সেজন্য উন্মুখী হযে আছে---,স আসবে। তবে তার শিল্পকলা সঙ্গীত কবিতা চিত্রে ধ্যানে উপাসনায চিন্তাষ প্রমে আশায় স্নেহে মাযান্য পৃথিবীব ওল্ম সার্থক হবে । অনাগত সে অ| দুরে ছেলেটির জন্যে পৃথিবীমাযেব বুকটি তুর্ষি তা হযে আছে । কিন্তু ছেলেটি যখন এলে, তখনই কি দেখিলে, না। সকলে দেখে ? ঐ খে অন্ধকার বনের উপরের মেঘন্ধকার স্তব্ধ আকাশে, ছিন্নভিন্ন মেঘের ফাকি দিযে তৃতীয়ার চাদটুকু দেখা যাচ্ছে, কে ওর মর্ম বোঝে ? তাই মনে হয। ভগবান যেন মাঝে মাঝে দুঃখ করেন। তার এই বিপুল রহস্যে ভরা সৃষ্টির সৌন্দয্য ভাল কবে। বুঝলে বা বুঝ৩ে চেষ্টা করলে এমন লোক খুব কম। তিনি যে যুগ যুগ ধবে তপস্যায় পর শান্ত মৃত্যুঞ্জয, অমৃত্যরস মন্থন করে তুললেন---এই বিরাট, বিদ্রোহী, জড়-সমূদ্র মন্থন করে • • • • • •, তার অনন্ত যুগের তপস্যার ফল এই অমৃত কেউ পান করলে না, কেউ আগ্রহ দেখালে না পান করবার। কোন যে তার বরপুত্রেরা মাঝে মাঝে পৃথিবীতে পথ ভুলে এসে পড়ে, তারা এ জগতের তুচ্ছ জিনিযে ভোলে না, তাদের মন পৃথিবীর সুখ দুঃখ ভোগালালসার অনেক উৰ্দ্ধে, ঐ অমৃতলোকে, ঐ cosmic সৌন্দয্যে ডুবে আছে, অনেক বড় vision তারা স্থাখে, সকলের জন্যে বিজ্ঞানে ও জ্ঞানে, গানে কবিতায, ছবিতে কথায় লিখেও রেখে যায, কিন্তু তাদের কথা শোনে বোঝে খুব কম লোকেই।--তার চেয়ে সুদের হিসেব কসালে ঢ়ের বেশী আনন্দ এরা পায় । ৷৷ ২২শে আগষ্ট, ১৯২৫), ভাগলপুর। 为必