পাতা:স্মৃতির রেখা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বড় বাসার ছাদে বসে বসে ছেলেবেলার দুই একটা বড় ঘটনার কথা ভাবতে চেষ্টা করেছিলাম। একটু বিশ্লেষণ করে দেখলাম। এই রকম করে বলা যেতে পারে-শৈশব তো সকলেরই হয়-ওতে ভাববার কি আছে ! এ আর নতুন কথা কি ? "তা নয়। এই ভেবে-দেখাটাই আসল । না ভাবলে ভগবানের সৃষ্টি মিথ্যা হয়ে পড়ে । জগতে যে এত সৌন্দৰ্য্য তার সার্থকতা তখনি যখন মানুব তাকে বুঝবে, গ্রহণ করবে, তা থেকে আনন্দ পাবে। নইলে আকাশের ইথারে তো চব্বিশ ঘণ্টা নানা ভাবের স্পন্দন ৮লছে, কিন্তু যে বিশিষ্ট ধরনের স্পন্দনের ঢেউ এর নাম সঙ্গীত তা অতি আনন্দদায়ক হ’ল কেন ? দিনের পর দিন সূৰ্য্য অস্ত যায়, পাগী গান করে, খোকা খুকীর হসে-যদি কেউ না দেখতো, না শুনতে-তবে মানুষের দৈনন্দিন বা মানসিক জীবনে তাদের সার্থকতা কিসের থাকতো ? কিন্তু মানুষের মনের সঙ্গে যখন এদের যোগ হয় তখনই এদেরও সার্থকতা, মনের ও সার্থকতা । মনেব। সার্থক তা যে এই বিপুল সৃষ্টির আনন্দকে সে ভোগ করে নিয়ে নিজেও বড় হয়ে উঠল-আত্মাকে আর এক ধাপ উঠিয়ে দিলে--এদের সার্থকতা এই সে এরা সে উন্নতির আনন্দের কারণ হ’ল । তাই আমাদের শাস্ত্ৰও যোগকে অত বড় করে গিয়েছে ! এই বিশ্বের অনন্ত আত্মার সঙ্গে আমাদের আত্মার যোগই মানবজীবনের লক্ষ্য। সে কি রকম ? মানুষ সাধারণত ছোট হয়ে থাকে-হিংসা-দ্বেষ, অর্থচিন্তা তার কারণ। অনন্ত অধিকারের বাণী সে শোনেনি বলেই সে নিজেকে মনে করে ছোট-বাইরের আলো পায় না বলেই এই দুৰ্দশা । এই ভূপতিত, ধূলি-লুষ্ঠিত, আত্মাকে উচুতে ওঠাতে পারে তার মন । মন মুদিখানার দেকোন থেকে বার হয়ে পোদারী আডডা । খোলে এসে । বাইরের অনন্ত নক্ষত্র জগতের দিকে প্রশান্ত জিজ্ঞাসু চোখে চেয়ে থাকুক-কান পেতে নদীর মৰ্ম্মর, পাখীর সুর, রন্ধ থেকে উপচীীয়মান সঙ্গীত শুনুক-এই হোল যোগ। সঙ্গে সঙ্গে মনকে প্রসারিত করে দিক অনন্তের দিকে-এই হোল যোগ !! আর সে ছোট থাকবে না-বড় হয়ে যাবে। ঐ অনন্ত শূন্যের উত্তরাধিকারী সে যে নিজে একথা বুঝবে—কি অনন্ত আনন্দ তার জন্যে অপেক্ষা করছে তা বুঝবে-আনন্তের দিকে বিসপিত তার আত্মাই তখন তাকে বড় করে তুলবে। এই অবস্থা ঘটেছিল এক সুদূর অতীতে সেই চিন্তাশীল কবির-যিনি জোর গলায় জ্ঞানের চিন্তার স্পৰ্দ্ধায় বলেছিলেন পুরুষং মহান্তং আদিত্যবৰ্ণং তমসাং পরস্তাত্ম-তিনি বুঝেছিলেন ত্বামেৰ 8 Na