পাতা:স্রোতের গতি - ইন্দিরা দেবী (১৯২১).pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্রোতের গতি
৩৯

দু’টি আর চক্‌চকে চোখ—এই সব সম্পত্তি থাকায় অমিয়ার মন্দ লাগিতেছিল না। কিন্তু ছেলেটি তার আশ্রয়দাত্রীর অপরিচিত মুখ পছন্দ করিতেছিল না, অত্যন্ত বিরক্তিপূর্ণ মুখে সে অমিয়ার পানে চাহিয়া ঠোঁট ফুলাইয়া কাঁদিয়া উঠিতেছিল। পাছে তাহার লালার রসে কাপড় চোপড় খারাপ হইয়া যায়, সেই ভয়ে অমিয়া তাহাকে আলগোছে ধরিয়া রাখিয়াছিল, ইহাও খোকার বিরক্তির দ্বিতীয় কারণ। অমিয়ার হাতে রিষ্টওয়াচের উপরও তাহার চক্ষু ছিল, কিন্তু তাহার অপরিচ্ছন্ন হাতে সেটি দিতে অমিয়ার মোটেই ইচ্ছা হইতেছিল না। এই সকল বাধা ও ঈপিত বস্তুটি না পাওয়ায় এবং অমিয়ার কোলে লইবার সঙ্কোচকুঞ্চিত ধরণে খোকা এমনি কান্না আরম্ভ করিয়া দিল যে, তাহাকে শান্ত করিবার জন্য দোলা দিয়া, চাপড়াইয়া, কখনো বসাইয়া, কখনো দাঁড় করাইয়া—নানা উপায়েও অমিয়া তাহাকে চুপ করাইতে পারিল না। সে কখনো কোনো ছোট ছেলেকে এমন ভাবে কাছে ডাকে নাই, বশীভূত করিতে পারে নাই, চাহেও নাই। ছেলেদের মন ভুলাইবার মন্ত্র ছড়া বা গান এ সব কখনও অনুশীলন করে নাই; করাটাকে সে বরাবর পাগলের কাণ্ড বলিয়াই মনে করিয়া আসিয়াছে। তাহার ন্যায় বিবাহ-