পাতা:হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি গল্প

কাত্তিক তার কবিতার খাতায় লিখলে—নারী, বুঝিতে না পারি কবে, একান্ত আমারি তুমি হবে, কত দিনে ওগো কত দিনে, পারছি নে আর পারছি নে।

 বংশলোচন। এ সব তো ভাল কথা নয়। চাটুজ্যে মশায়, চরণবাবু ছেলের বিয়ে দেন না কেন?

 চাটুজ্যে। বলেছি তো অনেকবার, কিন্তু চরণ বড় একগুঁয়ে। অন্য বিষয়ে সেকেলে হ’লেও ছেলের বিয়ে দেবার বেলায় সে একেলে। বলে, লেখাপড়া সাঙ্গ করুক, রোজগার করুক, তার পর বিয়ে। তবে কাত্তিকের জন্যে কনে ঠিক করাই আছে, চরণের বাল্যবন্ধু রাখাল সিংগির মেয়ে। তের-চোদ্দ বছর আগে দুই বন্ধুতে কথা স্থির হয়। তার পর রাখালবাবু মারা গেলেন, কিছুকাল পরে তাঁর স্ত্রীও গত হলেন, মেয়েটার ভার নিলে তার মামা। মামা শুনেছি কোথাকার জজ, সম্প্রতি রিটায়ার করেছেন।

 নগেন। রাখাল সিংগির মেয়ে তো? কাত্তিক কখ‍্খনো তাকে বিয়ে করবে না, সে মেয়ে নাকি জংলী ভূত।

 এমন সময় চরণ ঘোষ আসিয়া পৌঁছিলেন। প্রৌঢ় ভদ্রলোক, মাথায় একটি ছোট টিকি, কাঁচা-পাকা ছাঁটা গোঁপ, গলায় কণ্ঠি, এক হাতে ছাতা, অন্য হাতে ছোট ব্যাগ। চরণ হাঁপাইতে হাঁপাইতে বলিলেন ‘পাজী হতভাগা!’

৮২