মানব আবার হেসে বলে, তুমিও বসোনা মাসী, শুনে বল না কেমন লাগল ? তোমার পেটেও তো বিদ্যের বালাই নেই, তুমিও যাচাই করতে পারবে কেমন হয়েছে।
কুঞ্জর মা ফোলা ফোলা চামড়া ঝোলা মুখে গালভরা হাসি হাসে ।
সামান্য একটুখানি হাসি তার মুখে কোনদিন দেখেছে কিনা মনে করতে পারে না মানব।
- দেঁড়িয়ে দেঁড়িয়েই শুনছি বাবা।
খালেকের কবিতাটা আবৃত্তি করে শুনিয়ে মিনিটখানেক চুপচাপ দুজনের মুখের ভাব লক্ষ্য করে মানব আত্তিকে জিজ্ঞাসা করে, কেমন লাগল?
আত্তি বলে, ইস! খিদের জালায় এমন করে মানুষ ! তা সত্যিই তো, করেই তো!
কুঞ্জর মাকে প্রশ্ন করতে হয় না, সে নিজেই কপাল চাপড়ে বলে, পোড়া পেটের ঝনঝাট,-বাবারে!
মানব তারপর নিজের গল্পটা পড়ে। আত্তি আর কুঞ্জর মা’র থমথমে মুখের দিকে চেয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করতে সাহস হয় না মানবের।
আত্তি ঢোক গিলে কাঁপা জড়ানো গলায় বলে, ছড়াটা আরেকবার শোনাও দিকি?
মুখস্ত হয়ে গিয়েছিল। তাদের মুখের দিকে চেয়ে কবিতাটা আরেকবার আবৃত্তি শুরু করার পরেই দু’জনের চোখে জল জমে ঝরে পড়ার প্রক্রিয়াটা দেখতে দেখতে মানবের গলাও কেঁপে যায়।
আবৃত্তি শেষ হওয়া মাত্র দ'জনে তারা একভাবে কিন্তু দু'রকম ভাষায় যেন ফেটে পড়ে,-যার মর্মার্থ হল: কেন? কেন? কেন না খেয়ে মারবে মানুষ ?
১১৮