পাতা:হরিদাসের গুপ্তকথা - পঞ্চানন রায় চৌধুরী.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪৬ হরিদাসের গুপ্তকথা । যুবকের বাহু যুগল খুব দৃঢ় মাংসল, বক্ষঃস্থল বিশাল, অপুলীচয় চম্পক দাম সদৃশ ও তিন চারিটি বহুমূল্য অপুরী দ্বারার মুশোভিত; অভিনব যৌবন সমাগমে তাহার প্রতোক অল্প প্রত্যঙ্গ সদ্যঙ্ক প্রকারে সবল ও সুদৃঢ় হইয়াছে এবং তাহাকে দেখিলে খুব বলবান বলিয়া বোধ হর । যুবকের সর্বাঙ্গ সভ্রান্ত বাঙ্গালীর ন্যায় বসনে ভূষণে ভূষিত। পরিধেয় একখামি উত্তম ঢাকাই ধুতি ; গায়ে মসলিনের একট। আলখাল্লা, তষ্ঠ। উপর কিংখাপের এক ফতুয়া। ও সর্বোপরি একথানি বেনারসী ওড়না ব্রাহ্মণের উপবীতের যার বাধা রঙ্গিয়াছে। যুবকের গলায় দুই তিনটি চাঁবিযুক্ত এক ছড়া সরু সোণার গোট, অগুলিতে হীরকাঙ্গুরী ও পারে এক জোড়া উত্তন জরির লপেটা জুতা । শোভা পাইতেছে । বুধবার রাত্রে বাবুর সহিত বক্সীর যে কথাবার্ত হইয়াছিল, তাহা আমার স্মরণ হইল ; সুতরাং আমি বেশ বুঝিতে পারিলাম যে, এই যুবকই আজিমগঞ্জের বার্লো সাহেবের কুঠির দাওয়ান মাণিকলাল সরকারের পুত্র ; আমি তখন ইগার নাম জানি নাই, কাজেই তাগ বলিতে পারিলাম না। । কৰ্ত্তাবাবুর অভ্যর্থনায় আপ্যারিত হইয়া সকলে আসন পরিগ্রহ করিলে, বক্সী সেই ছোট চোখ টা বুজিয়ে সেই যুবককে সম্বোধন করিয়া কহিল, “বাবুজি! স্বর্গে উঠতে গেলে বেদন সি ডি ভাঙতে হয়, তেমনি এ সব আয়েসের জায়গায় আসতে হ’লে একটু কষ্ট স্বীকার করতে হয়। যেমন কাটা গাছে গোলাপ ফুল ফোটে, অন্ধকার খনির মধ্যে হীরক থাকে, সেইরূপ কিষণজি বাবু এই সামাঠ পল্লী মধ্যে বাস করিতেছেন, কিন্তু সহরের যাবতীয় দৌখিন বড় লোক এখানে আসেন ; এই দেখুন না, আপনার সঙ্গে একটু আমোদ করবেন বলে স্বয়ং মহারাজ আজ এখানে পদার্পণ ক’রেছেন ।