পাতা:হলুদ পোড়া - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হলুদ পোড়া SY শান্তির হাতের বাসন ঝন ঝন শব্দে পড়ে গেল। উটপাড়ি’ করে । কাছে ছুটে এসে ভয়াৰ্ত্ত কণ্ঠে সে জিজ্ঞাসা করল, “কোথায় কে ?” কোনখানে ?” বঁাশ ঝাড় থেকে চেনা গলার আওয়াজ এল -“আমি মাষ্টারবাবু। বঁাশ কাটছি।” ‘কে তোকে বঁাশ কাটতে বলেছে ?” শান্তি বলল, “আমি বলেছি। ক্ষেন্তি পিসী বলল, নূতন একটা বঁাশ কেটে আগা মাথা একটু পুড়িয়ে ঘাটের পথে তাড়াতাড়ি ফেলে রাখতে । ভোরে উঠে সরিয়ে দেব, সন্ধের আগে পেতে রাখব। তুমি যেন আবার: ভুল করে বঁাশটা ডিঙ্গিয়ে যেও না।” সন্ধ্যার আগেই শান্তি আজকাল রাধা বাড়া আর ঘরকন্নার সব কাজশেষ করে রাখে। অন্ধকার ঘনিয়ে আসার পর ধীরেনকে . সঙ্গে না নিয়ে বড় ঘরের চৌকাট পার হয় না, ছেলেমেয়েদেরও ঘুরের মধ্যে আটকে রাখে । সন্ধ্যা থেকে ঘরে বন্দী হয়ে ধীরেন আকাশ পাতাল ভাবে আর মাঝে মাঝে সচেতন হয়ে ছেলেমেয়েদের আলাপ শোনে। “ছোটপিসী ভূত হয়েছে।” ভূত নয়, পেত্নী। এ ব্যাটাছেলে ভূত হয়।” ঘরের মধ্যেও কারণে অকারণে শান্তি ভয় পেয়ে আঁতকে ওঠে। কালত প্রথম রাত্রে একটা প্যাচার ডাক শুনে ধীরেনকে আঁকড়ে ধরে গোঙাতে গোঙাতে বমি করে ফেলেছিল ৷ ” বড় ঘরের দাওয়ার পূর্ব প্রান্তে বসে তামাক টানতে টানতে দিনের আলো স্নান হলে এল। এখানে বসে ডোবার ঘাট আর দু’ধারের বঁাশ ঝাড় । ও জঙ্গল দেখা যায়। "জঙ্গলের পর সেনেদের কলাবাগান। সেনেদেরু কাছারি ঘরের পাশ দিয়ে দূরে বোসেদের মজা পুকুরের তীরে মরা গজারিক্ত