পাতা:হারামণি - মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

৷৷৵৹

হয় তখন তাহারা নিজেদের দলের গুরুকে বড় প্রমাণ করিবার জন্য গানের উপরে পরস্পর পরস্পরের প্রতি দুর্ব্বোধ্য প্রশ্ন ও হিঁয়ালীচ্ছলে আক্রমণ করে। যাহারা ঐ গানের জওয়াব দিতে পারে তাহাদের সঙ্গে আবার গানের পাল্লা হয়। উত্তরোত্তর ঐ গানের পাল্লা বেশী হইতে থাকে। এমনও শুনা যায় যে সারারাত্রি শুধু উত্তর প্রত্যুত্তরের গান করিতে শেষ হইয়া যায়। আমাদের নিকট যে সকল গান দুর্ব্বোধ্য, উহার জোড়া গান একসঙ্গে শুনিতে পাইলে তদ্রুপ হইত না। প্রত্যেক হিঁয়ালী গানের জোড়া আছে।

 গীতি কবিতা জাতীয় অন্য গান আছে তাহার সহিত তত্ত্বের কোন সম্পর্ক নাই। এই গান সাধারণতঃ ধুয়া, বারোমাসী, জারী, শারী প্রভৃতি নামে অভিহিত। ধুয়া গানের আবার প্রকার ভেদ আছে, রসের ধূয়া, চাপান ধূয়া প্রভৃতি। জারীগান সাধারণতঃ কারবলায় নিহত শহিদকে লইয়া রচিত। এই গান অত্যন্ত করুণ। এই গান শ্রবণ করিলে অশ্র সম্বরণ করা অসম্ভব। জারী পার্সী শব্দ অর্থ ক্রন্দন করা। শারীগানে অশ্লীলতা রহিয়াছে। বিদ্যাসুন্দরের মধ্যে যে রুচিবিকারের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়, ধর্ম্মমঙ্গলে যে সামাজিক ধারার পরিচয় পাই জারীগানের মধ্যে তাহার শেষ রেশ রহিয়াছে। জারীগান নৌকা বাইচের সময় গীত হয়।