পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হাস্যকৌতুক

  দুঃখীরাম। আপনার এইবেলা সাবধান হওয়া উচিত।

 বৈদ্যনাথ। উচিত তা যেন বুঝলুম কিন্তু কী করব বলুন।

 দুঃখীরাম। আপুনি কি অ্যালোপাথি মতে চিকিৎসা করাচ্ছেন?

 বৈদ্যনাথ। হাঁ।

 দুঃখীরাম। কী সর্বনাশ! অ্যালোপাথরা তো বিষ খাওয়ায়, ব্যামোর চেয়ে ওষুধ ভয়ানক। যমের চেয়ে ডাক্তারকে ডরাই।

 বৈদ্যনাথ। (শঙ্কিত হইয়া) বটে। তা কী করব? হোমিওপ্যাথি দেখব?

 দুঃখীরাম। হোমিওপ্যাথি তো শুধু জলের ব্যবস্থা।

 বৈদ্যনাথ। তবে কি বদ্যি দেখাব?

 দুঃখীরাম। তার চেয়ে খানিকটা আফিং তুতের জলে গুলে হরতেল মিশিয়ে খান না কেন।

 বৈদ্যনাথ। রাম রাম। তবে কী করা যায় মশায়?

 দুঃখীরাম। কিছু করবার নেই, কোনো উপায় নেই, এ আপনাকে নিশ্চিত বলছি।

 বৈদ্যনাথ। মশায়, আমি রোগা মানুষ আমাকে এ-রকম ভয়দেখানো উচিত হয় না।

 দুঃখীরাম। ভয় কিসের মশায়? এ-সংসারে তো কেবলই দুঃখ কষ্ট বিপদ। চতুর্দিক অন্ধকার। বিষাদের মেঘে আচ্ছন্ন। হাহুতাশ ছাড়া আর কিছু শোনা যায় না। এখানে আমরা বিষধর সৰ্পের গর্তে বাস করছি। এখেন থেকে বিদায় হওয়াই ভালো।

নিশ্বাস

 বৈদ্যনাথ। দেখুন, ডাক্তার আমাকে সর্বদা আমোদ-আহ্লাদ নিয়ে প্রফুল্ল থাকতে বলেছে। আপনার ওই মুখ দেখেই আমার ব্যামো যেন

৩৪