বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:হাস্য-কৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হাস্য-কৌতুক
২৫

 মা।  আদর কর্‌বি, তাতেও ভাব্‌তে হবে নরু?

 নর।  ভাব্‌তে হবে না মা? বল কি? ছেলেবেলাকার আদরের উপরে ছেলের সমস্ত ভবিষ্যৎ নির্ভর করে তা কি জান? ছেলেবেলাকার এক একটা সামান্য ঘটনার ছায়া বৃহৎ আকার ধরে আমাদের সমস্ত যৌবনকালকে আমাদের সমস্ত জীবনকে আচ্ছন্ন করে রাখে এটা যখন ভেবে দেখা যায়—তখন কি ছেলেকে আদর করা একটা সামান্য কাজ বলে মনে করা যায়! এইটে একবার ভেবে দেখ দেখি মা।

 মা।  থাক্ বাবা, সে কথা আরেক্‌টু পরে ভাব্‌ব, এখন তোমার ভাইটির সঙ্গে দুটো কথা কও দেখি!

 নর।  ওদের সঙ্গে এমন কথা কওয়া উচিত যাতে ওদের আমোদ এবং শিক্ষা দুই হয়। আচ্ছা, হরিদাস, তোমার নামের সমাস কি বল দেখি!

 হরি।  আমি চমা কাব৷

 মা।  দেখ দেখি বাছা, ওকে এসব কথা জিগেস কর কেন? ও কি জানে!

 নর।  না, ওকে এইবেলা থেকে এই রকম করে অল্পে অল্পে মুখস্থ করিয়ে দেব।

 মা।  (ছেলে তুলিয়া লইয়া) না বাবা, কাজ নেই তোমার আদর করে।

(নরহরি মাথায় হাত দিয়া পুনশ্চ চিন্তায় মগ্ন)

 মা।  (কাতর হইয়া) বাবা, আমাকে কাশী পাঠিয়ে দে, আমি কাশীবাসী হব।

 নর।  তা যাও না মা, তোমার ইচ্ছে হয়েছে, আমি বাধা দেব না!

 মা।  (স্বগত) নরু আমার সকল কথাতেই ভেবে অস্থির হয়ে পড়ে