পাতা:হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা - কৈলাসবাসিনী দেবী.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হিন্দু মহিলাগণের হীনাবস্থা ।

উপদেশ দিতেন, তাহা হইলে তাহাদিগের আর এরূপ কষ্ট ভোগ করিতে হইত না। হা মাতঃ বঙ্গভূমি! কত দিনে তোমার এই দুঃখিনী কন্যাগণ বিদ্যাবতী ও গুণবতী হইবে, কত দিনে এই দীন ভাবের অভাব হইয়া তাহাদিগের জ্ঞান ভাবের আবির্ভাব হইবে, এবং সেই জ্ঞান প্রভায় তোমাকে প্রান্বিত করিবে। আহা! আমাদিগের মাতা যদি বিদ্যাবতী হইতেন তাহা হইলে আর আমাদিগের এরূপ দুর্দ্দশা ঘটিত না। হায়! সেই অশিক্ষিত মাতৃগণ আপনারা যাহা উপদেশ পাইয়াছেন কন্যাগণকেও তাহাই প্রদান করিয়া থাকেন, তাঁহারা কন্যাগণকে নানা প্রকার ব্রত করান, এবং সেই সকল ব্রত করিলে কি কি ফল লাভ হয় তাহার উপদেশ দেন, কন্যাগণও তাহাই ব্রহ্মবাক্য বলিয়া গ্রহণ করে, এবং সেই উপদেশ মতেই চির কাল চলে।

 তাহারা বাল্যকালে গোময় ও তুষ দ্বারা বড় বড় লাড়ু পাকাইয়া পৌষ মাসের উষাকালে শুষ্ক দূর্ব্বাদল ও শর্ষপপুষ্প দিয়া তাহা পূজা করে এবং মাসের শেষ দিবসে তাহা জলে নিক্ষেপ পূর্ব্বক স্নাত হইয়া অষ্ট কুসুমের কাষ্ঠ আহরণ করিয়া, তদ্দ্বরা অগ্নি জ্বালাইয়া সেই অগ্নি সেবন করিতে করিতে গুলি গুলি ভক্ষণ করিয়া থাকে। এই ব্রতের নাম তুষতুষালী, ইহার ফল পিতা মাতা ভ্রাতা প্রভৃতির সুখ সমৃদ্ধি হয় এবং হস্তী অশ্ব ও নানাবিধ রত্ন লাভ হয়। চৈত্র মাসে ইহারা হরিদ্রায় এক খণ্ড ছিন্ন বস্ত্র রঙ্গিন করিয়া তাহাকে অঞ্জন ও সিন্দূরের বহু সংখ্যক ফোঁটা দ্বারা সুসজ্জিত করে এবং তাহাতে পান, ছোপানপাট ও কৌড়ি প্রভৃতি দেয়, এবং সধবা মহিলাগণকে