পাতা:হিমালয় - জলধর সেন.pdf/২০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বদারিনাথ * triର ছিলেন, কিন্তু আমি তাকে সবিনয়ে জিজ্ঞাসা কোল্লাম “আচ্ছা! নারায়ণের দেহ যে পরশ-পাথরে নিৰ্ম্মিত বলে, এ কথাটার অর্থ কি ? আমি ত অনেকক্ষণ ভেবে কিছুই ঠাহর কোর্তে পাল্লাম না, সত্যি সত্যি পরশ পাথর তা আর নেই!”-আশু তর্কের একটা সুন্দর সম্ভাবনা দেখে ভায়ার নিদ্রা ও বিরক্তি দুইই এককালে দূর হোয়ে গেল ! তিনি সোৎসাহে পার্শ্বপরিবর্তন কোরে বলতে লাগলেন যে, পরশ পাথর কথাটার অর্থ নিয়েই আমি গোল কছি। আমাদের দেশের সকল বিষয়েরই এক একটা নিগুঢ় অর্থ আছে—যাকে আজকাল অমারা আধ্যাত্মিক অৰ্থ বলে থাকি, এবং বৈদান্তিকের মতে কেহ কেহ তার প্ৰতি অন্যায় কটাক্ষপাতিও কোরে থাকেন । বোধ হয়। তিনি আমার উপর কঠাক্ষ কোরেই কথাটা বোল্লেন, কিন্তু উপস্থিত ক্ষেত্রে তিনি গুরু আমি শিয্য, সুতরাং কোন রকম উচ্চবাচ্য না কোরে শুনতে লাগলুম। তিনি অৰ্দ্ধারাত্র ব্যাপী সুদীর্ঘ বক্ততা দ্বারা যা বুঝালেন তার মোদখান। এই যে, পরশ-পাথরের গৃঢ় অর্থ ধৰ্ম্ম । কারণ, কল্পিত পরশপাথর স্পর্শে যেমন লোহা সোণ হোয়ে যায়—তেমনি ধৰ্ম্মের সংস্পর্শে তুচ্ছ । দ্রব্যও মূল্যবান হয়, এবং যা নিতান্ত মলিন, তাও উজ্জ্বল ও তেজোময় । স্থায়ে উঠে; লোক তখন তা আগ্রহভরে কণ্ঠে ধারণ করুবার জন্য ব্যাকুল হয় । নারায়ণের দেহ পরশ পাথরে নিৰ্ম্মিত, তার অর্থ কিনা। তিনি ধৰ্ম্ম । স্বরূপ ; তঁাকে স্পর্শ করা দূরের কথা, দর্শন মাত্র মানুষ খাটী সোণ ৷ হয়ে যায়। পাপ মনকে যে স্পর্শমণি নিষ্পাপ পবিত্ৰ কৈারে তুলতে পারে-লোহাকে তুচ্ছ সোণা করার পরশমণি তার কাছে কোথায় লাগে ? ? স্বীকার কোৰ্বতে লজ্জা নেই, বাস্তবিকই বৈদান্তিক ভায়ার এই বক্ততা আমার অতি মিষ্ট লেগেছিল। এমন একটা সার কথা তার কাছে হোতে আমি মুহুৰ্ত্তের জন্যও প্রত্যাশা করি নি; কিন্তু তার কথা শুনে আমার হৃদয়ে আর একটা নূতন চিন্তার উদয় হোলো-হায়! দেবতার।