পাতা:হিমালয় - জলধর সেন.pdf/২৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰত্যাবৰ্ত্তন । २१& পাহাড়ের ধস নেমে আমাদের সন্ন্যাসীগিরি জন্মের মত ঘুচিয়ে দেবে, আমরা তিনজন তখন এক জায়গাতেও নেই যে, একত্রে জড়িয়ে পোড়ে থাকব ; কে যে কোথায় তা আর সে ঝড় বৃষ্টির মধ্যে দেখতে পাওয়া গেল না। আমি একে নিজের প্রাণ নিয়ে ব্যস্ত, তার মধ্যে আবার স্বামীজির কথা মনে হোতে লাগলো। একটা গাছের শিকড় প্ৰাণপণে দুই হাত দিয়ে অ্যাকড়ে ধোরে আমি শুয়ে পোড়ে আছি। মাথার উপর দিয়ে কত কি বোয়ে যাচ্ছে, একবার একটা হয় তা প্ৰকাণ্ড ডালই হবে আমার মাথার কাছ দিয়ে চোলে গেল। কম্বলখানির দুই তিন জায়গা ছিড়ে গেল, গানের বই খানি কিন্তু বুকের মধ্যে আছে। ঝড় আর থামে না, তবু একটু নরম • হোলো ; বৃষ্টি খুব কম হোয়ে গেলো। বৃষ্টি কম হওয়াতে কিছু এলো গেল না ; তার চাইতে যদি বাতাসটা কমে গিয়ে বৃষ্টি সমভাবেই থাকতে তাতে আমার কোনই ক্ষতি ছিল ন! ; কাপড় ও কম্বল যতটা ভিজে গিয়েছিল তার চাইতে বেশী ভিজিবার যে ছিল না । এ ভাবে আমাকে অধিকক্ষণ আর থাকতে হয় নি। অচ্যুত বাবাজী আমার সম্মুখে কোথায় ছিলেন ; তিনি বিপুল বিক্ৰমে বাতাসের সঙ্গে যুদ্ধ কোবুতে কে বুতে আমার কাছে এসে উপস্থিত হোলেন এবং তঁর সেই বিশাল দেহ দিয়ে আমাকে আবৃত কোরে বোসলেন। আমার মনে পড়ে যখনই ঝড় বৃষ্টি ছোয়েছে, তখনই বৈদান্তিকের নিৰ্ম্মম কঠোর বক্ষতলে আমি আশ্ৰয় পেয়েছি। পক্ষীমাতা যেমন নিরাশ্রয় শাবককে বিপদকালে নিজে পাখা দুইখানির নীচে লুকিয়ে রাখে বৈদান্তিকের সেই বিপুলবক্ষ তেমনি আমাকে অনেক বিপদের সময়ে আশ্ৰয় দিয়ে রক্ষা কোরেছে । আমি বিপন্ন হোলে আর কোন দিনই সে মায়াবাদের আশ্রয় গ্ৰহণ কোরে আমাকে উড়িয়ে দিতে পারে নি। এ মানুষটা এতদিন আমাদের সঙ্গে রইল, তবু এর ভাব গতিক আমি ত মোটেই বুঝতে পারলুম না ; তার মতামতের একটা - সামঞ্জস্য কখনও দেখা গেল না। কি একটা এলোমেলো হৃদয় নিয়ে সে যে