কিয়দ্দিন পরে অপ্রোদীতী দেবীর আদেশ মতে রাজকুমার স্কন্দর বহুসংখ্যক সাগরযান নানা ধন ও পণ্য দ্রব্যে পরিপূরিত করিয়া লাকীডিমন্ নামক নগরাভিমুখে যাত্রা করিলেন। তথাকার রাজা মানিল্যুস্ অতিসম্মান ও সমাদরের সহিত রাজতনয়কে স্বমন্দিরে আহ্বান করিলেন। কিছুদিনের পর কোন বিশেষ কার্য্যানুরোধে তাহাকে দেশান্তরে যাইতে হইল। রাণী হেলেনী এ রাজ-অতিথির সেবায় নিয়ত নিযুক্ত রহিলেন।
দেবী অপ্রোদীতীর মায়াজালে হতভাগিনী রাণী হেলেনী রাজ-অতিথি স্কন্দরের প্রতি নিতান্ত অনুরাগিণী হইয়া পতিব্রতা ধর্ম্মে জলাঞ্জলি দিয়া স্বপতি গৃহ পরিত্যাগ পূর্ব্বক তাহার অনুগামিনী হইলেন এবং তাঁহার পিতা রাজচুড়ামণি প্রিয়ামের রাজ্যে সেই রাজ্যের কালরূপে প্রবেশ করিলেন। রাজা মানিল্যুস্ শূন্যগৃহে পুনরাবর্ত্তন করিয়া স্ত্রীবিরহে একান্ত অধীর ও ক্ষিপ্তপ্রায় হইয়া উঠিলেন।
এই দুর্ঘটনা হেলাস্ অর্থাৎ গ্রীশদেশে প্রচারিত হইলে, তদ্দেশীয় রাজাসমূহ পূর্ব্বকৃত অঙ্গীকার স্মরণ পূর্ব্বক সসৈন্যে মানিল্যুসের সাহায্যার্থে উপস্থিত হইলেন, এবং তাহার জ্যেষ্ঠভ্রাতা আর্গস্ দেশের অধীশ্বর আগেমেম্নন্কে সৈন্যাধ্যক্ষপদে অভিষিক্ত করিয়া ট্রয়নগর আক্রমণাভিলাষে সাগরপথে যাত্রা করিলেন। বৃদ্ধরাজ প্রিয়াম্ স্বীয় পঞ্চাশৎ পুত্রকে যুদ্ধার্থে অনুমতি দিলেন। মহাবীর হেক্টর (যাহাকে ট্রয়স্বরূপ লঙ্কার মেঘনাদ বলা যাইতে পারে) দেশ বিদেশীয় বন্ধুগণের এবং স্বীয় রাজসংসারস্থ সৈন্যদলের অধ্যক্ষপদ গ্রহণ করিলেন। দশ বৎসর উভয় দলে তুমুল সংগ্রাম হইল।