পাতা:হেক্‌টর বধ - মাইকেল মধুসূদন দত্ত.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হেক্‌টর বধ।
২৩

করিতে চাহ? দেবেন্দ্রাণীর এতাদৃশ বাক্যে দেবেন্দ্রকে রোষান্বিত দেখিয়া তাহাদের বিশ্ববিখ্যাতপুত্র বিশ্বকর্ম্মা এ কলহাগ্নি নির্ব্বাণার্থে এক স্বর্ণপাত্র অমৃত পূর্ণ করিয়া আপন মাতাকে প্রদান করতঃ কহিলেন, হে মাতঃ! আপনারা দুইজনে বৃথা কলহ করিয়া কি নিমিত্ত সুখময়ী দেবপুরীর সুখসম্ভোগ ভঞ্জন করিতে চাহেন। পুত্রবরের এই বাক্যে আয়তলোচনা দেবেন্দ্রাণী নিরস্ত হইলেন। পরে দেবতারা সকলে একত্র হইয়া সমস্ত দিন দেবোপাদেয় সামগ্রী ভোজন ও অমৃত পান করিয়া কালাতিপাত করিতে লাগিলেন। দেব দিনকর করে স্বর্ণ বীণা গ্রহণ পূর্ব্বক নরগায়িকা দেবীর সুমধুর ধ্বনির মাধুর্য্য বৃদ্ধি করিয়া সকলের মনোরঞ্জনে প্রবৃত্ত হইলেন। এমত সময়ে রজনীদেবীর আবির্ভাব হইল।

 সুরলোকে ও নরলোকে সর্ব্বজীবকুল নিদ্রাবৃত হইল। কিন্তু নিদ্রাদেবী দেবকুলপতির নেত্রদ্বয় এক মুহূর্তের নিমিত্তও নিমীলিত করিতে পারিলেন না। কেননা, তিনি কি রূপে আকিলীগের সম্ভ্রম বৃদ্ধি, ও রাজা আগেমেম্‌ননের অধঃপাত সাধন করিবেন, এই ভাবনায় সমস্ত রাত্রি জাগরিত রহিলেন। অনেকক্ষণ পরে দেবরাজ কুহকিনী স্বপ্নদেবীকে আহ্বান করিয়া, কহিলেন, হে কুহকিনি! তুমি দ্রুতগতিতে রাজা আগেমেম্‌ননের শিবিরে যাও, এবং তথায় গিয়া রাজ-শিরোদেশে দণ্ডায়মানা হইয়া এই কহিও যে, হে আগেমেম্‌নন্‌! অলিম্পুসনিবাসী অমরকুল দেবেন্দ্রাণী হীরীর অনুরোধে তোমার প্রতি প্রসন্ন হইয়াছেন, তুমি সসৈন্যে প্রশস্তপথশালী ট্রয়নগর আক্রমণ করতঃ তাহা পরাজয় কর। দেবেন্দ্রের এই আদেশ পালনার্থে স্বপ্নদেবী অতিবেগে শিবিরপ্রদেশে আবির্ভূতা