পাতা:হেক্‌টর বধ - মাইকেল মধুসূদন দত্ত.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হেক্‌টর বধ।
২৯

করি, তখন দেবতারা কি ছলে, আমাদের অদৃষ্টে ভবিষ্যতে যে কি আছে, তাহা জানাইয়াছিলেন। আমরা যৎকালে যাত্রাগ্রে মহা সমারোহে দেবকুলপতির পূজা করি, তৎকালে পিঠতল হইতে সহসা এক সর্প ফণা বিস্তৃত করিয়া বহির্গত হইল। এবং অনতিদূরে একটী উচ্চ বৃক্ষের উচ্চতম শাখাস্থিত পক্ষীনীড় লক্ষ্য করিয়া তদভিমুখে উঠিতে লাগিল। সেই নীড়মধ্যে জননী পক্ষিণী আট্‌টী অতি শিশু শাবকের উপর পক্ষ বিস্তৃত করিয়া তাহাদিগকে রক্ষা করিতেছিল। কিন্তু সমাগত রিপুর উজ্জ্বল নয়নানলে দগ্ধপ্রায় হইয়া আত্মরক্ষার্থে পবনপথে বৃক্ষের চতুষ্পার্শে আর্ত্তনাদে উড়িতে লাগিল। অহি একে২ আট্‌টী শাবককেই গিলিল। জন্মদায়িনী এই হৃদয়কৃন্তনী ঘটনা সন্দর্শনে শূন্য নীড়ের নিকটবর্ত্তিনী হইয়া উচ্চতর আর্তনাদে দেশ পুরিতেছে, এমত সময়ে সর্প আচম্বিতে লম্বমান হইয়া তাহাকেও ধরিয়া উদরস্থ করিল। উদরস্থ করিবামাত্র সে আপনি তৎক্ষণাৎ পাষাণদেহ হইয়া ভূতলে পড়িল। দেবমনোজ্ঞ কালকষ্‌ তৎকালে এই অদ্ভুত প্রপঞ্চের ব্যঙ্গতা ব্যক্তার্থে মুক্তকণ্ঠে কহিলেন, হে বীরবৃন্দ! তোমরা যে ট্রয়নগর অধিকার করিয়া রাজা প্রিয়ামের গৌরব-রবিকে চিররাহুগ্রাসে নিক্ষেপ করিয়া চিরযশস্বী হইবে, দেবকুল তাহা তোমাদিগকে এই ইঙ্গিতে দেখাইয়াছেন; কিন্তু তন্নিমিত্ত নয় বৎসর কাল তোমাদিগকে দুরন্ত রণক্লান্তি সহ্য করিতে হইবেক। এই কহিয়া অদিস্যুস্‌ পুনরায় কহিতে লাগিলেন, হে বীরকুল! তোমরা সে দেবভেদভেদকের কথা কেন বিস্মৃত হইতেছ? দেখ, নবম বৎসর