পাতা:হেক্‌টর বধ - মাইকেল মধুসূদন দত্ত.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হেক্‌টর বধ।
৪৯

সমরশায়ী করিয়া বিপক্ষপক্ষের ব্যুহে অবার বলে প্রবেশ করিলেন। প্রচণ্ড ধন্বী পণ্ডর্শ রণদুর্ম্মদ দ্যোমিদ্‌কে রণমদে প্রমত্ত দেখিয়া, এ দুর্দ্দান্ত শূলীকে দান্ত করিতে নিতান্ত উৎসুক হইলেন। এবং ভীষণ শরাসনে গুণ যোজনা করিয়া এক তীক্ষ্ণতর শর তদুদ্দেশে নিক্ষেপিলেন। ভীষণ অশনি-সদৃশ বাণ রণদুর্ম্মদ দ্যোমিদের কবচ-চ্ছেদন করতঃ দক্ষিণকক্ষে প্রবিষ্ট হইলে, সহসা শোণিত নিঃসরণে জ্যোতির্ম্ময় বর্ম্ম বিবর্ণ হইয়া উঠিল। পণ্ডর্শ সহর্ষে চীৎকার করিয়া কহিলেন, হে বীরবৃন্দ! তোমরা উল্লাসিত চিত্তে অগ্রসর হও; কেন না, আমি বোধ করি, গ্রীক্‌দলের বলীশ্রেষ্ঠ যে শূর, সে আমার শরে অদ্য হতপ্রায় হইয়াছে। কিন্তু বীরর্ষভ পণ্ডর্শের এ প্রগল্‌ভ-গর্ভ বাক্য পণ্ড হইল। দেবী আথেনীর কৃপায় রণদুর্ম্মদ দ্যোমিদ্ সে যাত্রায় নিস্তার পাইয়া পুনঃ যুদ্ধারম্ভ করিলেন। যেমন ক্ষুধাতুর সিংহ মেষপালকের অস্ত্রাঘাতে নিরস্ত না হইয়া ভীমনাদে লম্ফ দিয়া মেষাশ্রমে প্রবেশ করে, এবং সে স্থলস্থ, ভয়ে জড়ীভূত, অগণ্য মেষসমূহের মধ্যে যাহাকে ইচ্ছা, তাহকেই বধ করে; সেইরূপ রণদুর্ম্মদ দ্যোমিদ্‌ বৈরীদলকে নাশিতে লাগিলেন।

 ট্রয়নগরস্থ বীরকুলচূড়ামণি এনেশ সৈন্য-মণ্ডলীকে লণ্ডভণ্ড দেখিয়া বীরেশ্বর পণ্ডর্শকে আহ্বান করিয়া কহিলেন, হে বীরকুলতিলক! তুমি আসিয়া অতি ত্বরায় আমার এই রথে আরোহণ কর। চল, আমরা উভয়ে এই রণদুর্ম্মদ দ্যোমিদ্‌কে রণে মর্দ্দন করিয়া চিরযশস্বী হই। পরে বীরদ্বয় এক রথোপরি আরূঢ় হইলে,