পাতা:হেক্‌টর বধ - মাইকেল মধুসূদন দত্ত.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হেক্‌টর বধ।
৯৩

অমরাকৃতিতে বীরকেশরী হেক্‌টরের চতুষ্পার্শ্বে দণ্ডায়মান হইলেন। যেমন কোন কুলক্ষণ নক্ষত্র ঘনাচ্ছন্ন আকাশে উদয় হইয়া ক্ষণমাত্র স্বীয় অশুভ বিভায় অমঙ্গল ঘটনার বিভীষিকায় দর্শকজনের অন্তঃকরণে ভয় সঞ্চার করতঃ পুনরায় মেঘবৃত হয়, বীরকেশরী ট্রয় নগরীয় সৈন্য মধ্যে গ্রীক্‌সৈন্যের দর্শনপথে সেইরূপ প্রতীয়মান হইতে লাগিলেন; এবং তাহার বর্ম্ম হইতে যেন এক প্রকার কালাগ্নির তেজ বাহির হইতে লাগিল।

 যেমন কোন ধনী জনের শস্য ক্ষেত্রে কৃষীবলের অস্ত্রাঘাতে শস্যশীষ চতুর্দ্দিকে পতিত থাকে, সেইরূপ দুই পক্ষ হইতে বীরবৃন্দ ভূতলশায়ী হইতে লাগিল। নিষ্কৃপা কলহকারিণী বিবাদদেবী হৃদয়ানন্দে উচ্চ চীৎকার প্রকাশ করিতে লাগিলেন। কিন্তু অন্যান্য দেব দেবীরা স্বীয় স্বীয় সুন্দর মন্দির হইতে রণক্ষেত্রের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করিতে লাগিলেন।

 যে সময়ে আটবিক জন অটবী প্রদেশে নানা বৃক্ষ কাটিতে কাটিতে ক্ষুধার্ত হইয়া ক্ষণকাল নিজ নিত্য ক্রিয়ায় পরাঙ্মুখ হয়, ও আহারাদি ক্রিয়াতে ক্ষুৎপিপাসা নিবারণ করে, সেই কাল উপস্থিত হইল। দিনকর আকাশমণ্ডলের মধ্যস্থলে অবস্থিতি করিতে লাগিলেন। রাজচক্রবর্ত্তী সৈন্যাধ্যক্ষ মহোদয় হর্ষ্যক্ষ পরাক্রমে রিপুব্যুহে প্রবেশ করিলেন। অনেকানেক রণীজন অকালে শমনালয়ে গমন করিতে লাগিলেন। যেমন রক্তদন্ত শোণিতাক্ত ক্রমশালী পরাক্রমী মৃগরাজকে, শাবক বৃন্দ নাশ করিতে দেখিলেও