[ ৪ ]
আপনাকে চিনিতে ও বুঝিতে আরম্ভ করিল। রবীন্দ্র নাথ গাহিলেন—
“বাংলার মাটী বাংলার জল
সত্য কর সত্য কর হে ভগবান্”
বাঙ্গালার জল বাঙ্গলার মাটী আপনাকে সার্থক করিতে লাগিল। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেক জ্ঞানীগুণী মহাপণ্ডিত আছেন, যাহারা নাকি বলেন যে, এই স্বদেশী আন্দোলন ইহা একটা বৃহৎ ভ্রান্তির ব্যাপার। আমরা নাকি সব দিকে ঠিক হিসাব করিয়া চলিতে পারি নাই। পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে আমাদের দেশে একটা প্রাণহীন জ্ঞানের আবির্ভাব হইয়াছে। এই মুখস্ত করা জ্ঞানের ক্ষমতা অল্পই; কিন্তু অহঙ্কার অনেক খানি। এই জ্ঞানে যাঁরা জ্ঞানী, তাঁহারা সব জিনিষ সের দাঁড়ি লইয়া মাপিতে বসেন। তারা অঙ্ক শাস্ত্রের শাস্ত্রী, সব জিনিষ লইয়া আঁক কষিতে বসেন। কিন্তু, প্রাণের যে বন্যা, সে ত অঙ্ক শাস্ত্র মানে না, সে যে সকল মাপ কাঠি ভাসাইয়া লইয়া যায়। স্বদেশী আন্দোলন একটা ঝড়ের মত বহিয়া গিয়াছিল, একটা প্রবল বন্যায় আমাদের ভাসাইয়া লইয়া গিয়াছিল। প্রাণ যখন জাগে তখন ত হিসাব করিয়া জাগে না। মানুষ যখন জন্মায়, সেত হিসাব করিয়া জন্মায় না, না জন্মাইয়া পারে না বলিয়াই সে জন্মায়। আর না জাগিয়া থাকিতে পারে না বলিয়াই প্রাণ একদিন অকস্মাৎ জাগিয়া উঠে। এই যে মহাবন্যার কথা বলিলাম, তাহাতে আমরা ভাসিয়া—ডুবিয়া বাঁচিয়াছি। বাঙ্গলার যে জীবন্ত