পাতা:Intermediate Bengali Selections.pdf/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর SS হইতে “আহা মারি শিশুকাল” ইতি কবিতাবাণী সনিঃশ্বাসে নিৰ্গত হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রাকৃতিক নিয়মে এই শিশুকেই আবার কিছুদিন মধ্যে সেই বয়স্কের স্থান গ্রহণ করিয়া জীবনদ্বন্দ্রে নিযুক্ত হইতে হয়। আমাদের স্নেহময়ী গবর্ণমেণ্টজননীর অনুগ্রহের মাত্রী ও, আমাদের আবদারের মাত্রা এমন হইয়া দাড়াইয়াছে যে, আর আমরা সেই আরামের পালঙ্ক ও তুলির দুধ সহজে ছাড়িতে চাহিতেছি না এবং আমাদের স্বচ্ছন্দতার অণুমাত্র ত্রুটি ঘটিলেই, শৈশবসুলভ সানুনাসিক কণ্ঠ ধ্বনি বাহির করিয়া জননীর মনোযোগ আকর্ষণ করিতে প্রয়াসী হইতেছি। বাস্তবিকই আমাদের মত সর্ব্বতোভাবে পরমুখাপেক্ষী কোন জাতির উন্নতি ঘটিয়াছে, তাহ ইতিহাসে লেখে না। আমাদের মেরুদণ্ডের সনাতন কোমলতা হইতেই এই অবস্থার উৎপত্তি হইয়াছে; আবার সেই অবস্থা হইতেই মেরুদণ্ডের কোমলতা বাড়িয়া যাইতেছে। আমরা কথায় কথায় আমাদের চরিত্রসংশোধনের প্রস্তাব করি, এবং এই চরিত্রসংশোধন না হইলে জাতীয় উন্নতির সম্ভাবনা নাই, এই মর্ম্মে মহতী ঘটা করিয়া বক্তৃতা করি। চরিত্রসংশোধন না হইলে যে উন্নতি ঘটবে না, ইহা সত্য কথা; কিন্তু চরিত্রসংশোধন ব্যাপারটাই কি এত সহজ জিনিষ? যেন ইচ্ছা করিলেই চরিত্রটা আপনা-আপনি শোধিত হইয়া যাইবে। কিঞ্চিলিক যেন ইচ্ছামাত্রেই আপনাকে কুম্ভীরে পরিণত করিবে! ডারুইন-বাদীরা বলেন, কুম্ভীরেরও পূর্বপুরুষ এককালে কেঁচোর মত ছিল। কিন্তু সেই কুম্ভীরত্বে পরিণতির পূর্ব পর্য্যন্ত তাহাকে কত যুগব্যাপী জীবনদ্বন্দ্বে নিযুক্ত থাকিতে হইয়াছে! ইচ্ছামাত্রেই চরিত্রশোধন “ঘটে না এবং প্রস্তাব-দ্বারাও জাতীয় উন্নতির সম্ভাবনা নাই।