পূরবী/পথিক/অবসান
অবয়ব
< পূরবী
(পৃ. ১২৯-১৩০)
অবসান
পারের ঘাটা পাঠালো তরী ছায়ার পাল তুলে
আজি আমার প্রাণের উপকূলে।
মনের মাঝে কে কয় ফিরে ফিরে—
বাঁশির সুরে ভরিয়া দাও গোধূলি আলোটিরে।
সাঁঝের হাওয়া করুণ হোক দিনের অবসানে
পাড়ি দেবার গানে॥
সময় যদি এসেছে তবে সময় যেন পাই,
নিভৃত খনে আপন মনে গাই।
আভাস যত বেড়ায় ঘুরে মনে—
অশ্রু-ঘন কুহেলিকায় লুকায় কোণে কোণে,—
আজিকে তা’রা পড়ুক ধরা, মিলুক পূরবীতে
একটি সঙ্গীতে॥
সন্ধ্যা মম, কোন্ কথাটি প্রাণের কথা তব,
বলো, কী আমি কবো।
দিনের শেষে যে ফুল পড়ে ঝ’রে
তাহারি শেষ নিঃশ্বাসে কি বাঁশিটি নেবো ভরে?
অথবা ব’সে বাঁধিব সুর যে-তারা ওঠে রাতে
তাহারি মহিমাতে॥
সন্ধ্যা মম, যে পার হ’তে ভাসিল মোর তরী
গাবো কি আজি বিদায় গান ওরি?
অথবা সেই অদেখা দূর পারে
প্রাণের চিরদিনের আশা পাঠাবো অজানারে?
বলিব,—যত হারানো বাণী তোমার রজনীতে
চলিনু খুঁজে নিতে॥
আণ্ডেস্ জাহাজ,
৩০ অক্টোবর, ১৯২৪।