বনলতা সেন/হৃদয় তুমি
হৃদয় তুমি
হৃদয় তুমি সেই নারীকে ভালােবাস তাই
আকাশের ঐ অগ্নিবলয় ভােরের বেলা এসে
প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছে অমেয় কাল হৃদয়সূর্য হবে
তােমার চেয়েও বেশি সেই নারীকে ভালােবেসে।
বাসুক—তবু সবের চেয়ে আলাের কথা এই:
আমি তাকে সময়পরিক্রমার পথে আবছায়াতে দেখে
নিজের মূল্যে রয়ে গেছে বলেই ভালােবাসি।
শরীর ঘেঁষে ভালােবাসে তবু তাে অনেকে।
কাজ-অকাজের ঠাসবুনােনির ফাঁকের থেকে আমি
দেখেছি আমায়, দেখেছি যেন বিকেলবেলার জলে
থমকে ভাসা মেঘের মতাে নীলাকাশের পথে
থেমে আছে; অথবা থেমে চলে
জানি না মেঘ; ভালােবেসে অথবা কৌতুহলে
জানি না নারীসূর্য আমায় অলােকিত করে
নিজের অস্তকক্ষে নেমে সূর্যপ্রক্রিয়ায়
চলে গেছে ভিতরে।
যে যার নিজের বিহিত কাজে। সকলই ঠিক-এইরকমভাবে
সারাটি দিন আমার হৃদয় ব্যাপ্ত করে রাখে।
স্বতই আমি যে গাল তিল যে হাত ভালােবাসি
রাত্রি হলে সে হাত—সেই সুদূর হাত এখনও আমাকে
জানি না বিশ্বশৃঙ্খলাকে আঘাত করে ভালােবাসে কিনা;
সীমা সময় প্রকৃতি তাতে চূর্ণ হয়ে যেত;
সকলই তবু স্থির রয়েছে—এই স্থিরতা তবু
তােমার আমার অজাত সব শিশুরও অভিপ্রেত।