বর্ণপরিচয় (দ্বিতীয় ভাগ, ১৯৩০)/৩য় পাঠ

উইকিসংকলন থেকে

৩ পাঠ।

সুশীল বালক।

 ১। সুশীল বালক পিতা মাতাকে অতিশয় ভাল বাসে। তাঁহারা যে উপদেশ দেন, তাহা মনে করিয়া রাখে, কখনও ভুলিয়া যায় না। তাঁহারা যখন যে কাজ করিতে বলেন, তাহা করে, যে কাজ করিতে নিষেধ করেন, কদাচ তাহা করে না।

 ২। সে মন দিয়া লেখা পড়া করে, কখনও অবহেলা করে না। সে সতত এই ভাবে, লেখা পড়া না শিখিলে, চির কাল দুঃখ পাইব।

 ৩। সে আপন ভ্রাতা ও ভগিনীদিগকে বড় ভাল বাসে, কদাচ তাহাদের সহিত ঝগড়া করে না, তাহাদের গায়ে হাত তুলে না, খাবার দ্রব্য পাইলে, তাহাদিগকে না দিয়া, একাকী খায় না।

 ৪। সে কখনও মিথ্যা কথা বলে না। সে জানে, যাহারা মিথ্যা কথা বলে, কেহ তাহাদিগকে ভাল বাসে না, কেহ তাহাদের কথায় বিশ্বাস করে না, সকলেই তাহাদিগকে ঘৃণা করে।

 ৫। সে কখনও অন্যায় কাজ করে না। যদি দৈবাৎ করে, তাহার পিতা মাতা ধমকাইলে, সে রাগ করে না। সে এই মনে করে, অন্যায় কাজ করিয়াছিলাম, এজন্য পিতা মাতা ধমকাইলেন, আর কখনও এমন কাজ করিব না।

 ৬। সে কখনও কাহাকেও কটু বাক্য বলে না, কুকথা মুখে আনে না, কাহারও সহিত ঝগড়া ও মারামারি করে না, যাহাতে কাহারও মনে ক্লেশ হয়, কদাচ এমন কাজ করে না।

 ৭। সে কখনও পরের দ্রব্যে' হাত দেয় না। জানে, না বলিয়া পরের দ্রব্য লইলে, চুরি করা হয়। চুরি করা বড় দোষ, যাহারা চুরি করে, সকলে তাহাদিগকে ঘৃণা করে।

 ৮। সে কখনও আলস্যে কাল কাটায় না। যে সময়ের যে কাজ, মন দিয়া তাহা করে। সে লেখা পড়ার সময়, লেখা পড়া না করিয়া, খেলা করিয়া বেড়ায় না।

 ৯। সে কখনও দুঃশীল বালকদিগের সহিত বেড়ায় না, তাহাদের সহিত খেলা করে না। সে মনে করে, দুঃশীলদিগের সহিত বেড়াইলে ও খেলা করিলে আমিও দুঃশীল হইয়া যাইব।

 ১০। সে যখন বিদ্যালয়ে থাকে, গুরু মহাশ্নয় যে সময়ে যাহা করিতে বলেন, প্রফুল্লু মনে তা করে, কদাচ তাহার অন্যথা করে না। সে কখনও তাঁহার কথার অবাধ্য হয় না, এজন্য তিনি তাহাকে ভাল বাসেন।