বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড)/১২৫

উইকিসংকলন থেকে

শিরোনাম সূত্র তারিখ
বাংলাদেশ জাতীয় সমন্বয় কমিটির সমাবেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের দাবী দৈনিক “আনন্দবাজার” ৬ মে ১৯৭১

বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদান ভারত সরকারের অপরিহার্য কর্তব্য

শহীদ মিনার জনসমাবেশে ঘোষনা

(স্টাফ রিপোর্টার)

 বাংলাদেশ জাতীয় সমস্বয় কমিটির ডাকে সারা ভারত বাংলাদেশ স্বীকৃতি দিবস উপলক্ষে বুধবার বিকেলে শহীদ মিনার ময়দানে গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা গয় যে, কালবিলম্ব না করে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি ও সাহায্য দেওয়া আজ ভারত সরকারের অপরিহার্য কর্তব্য। প্রস্তাবে আরও বলা হয় যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ভারতের জাতীয় জীবনের সামনে অগ্নিপরীক্ষা স্বরূপ। এই অপূর্ব সুযোগ ব্যর্থ হলে ভারতের বর্তমান জাতীয় জীবন বিকৃত হবে এবং ভাবী জীবনও হবে চরমভাবে বিপন্ন ও বিড়ম্বিত। ওই মর্মে একটি স্মারকলিপিও রাজ্যপাল সমীপে পেশ করা হয়।

 সভায় সভাপতিত্ব করেন ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার। তিনি অসুস্থতার জন্য সভা ত্যাগ করলে বিচারপতি শ্রী শঙ্কর প্রসাদ মিত্র সভার কাজ পরিচলনা করেন।

 সভার প্রারম্ভে শ্রীমতি সুচিত্রা মিত্র বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত “আমার সোনার বাংলা” গানটি গেয়ে সভার সূচনা করেন। বাংলাদেশের পতাকা শোভিত সভামঞ্চের দুই দিকে নেতাজী ও বঙ্গবন্ধু মজিবুর রহমানের আলোকচিত্র শোভা পায়।

 সভায় শ্লোগান দেওয়া হয়, বাংলাদেশকে জিততে হলে এপার বাংলার শান্তি চাই, ‘পিণ্ডি-পিকিং চক্রান্ত যুঝবো যুঝবো’ জয় বাংলা জয় হিন্দি ইত্যাদি।

 সভাপতির ভাষণে ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন বাংলাদেশের সমস্যাটি হল মসুষত্বের প্রশ্ন। এর একটা প্রতিবিধান হওয়া উচিত যাতে হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়, তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত।

 প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী প্রফুল্ল চন্দ্র সেন বলেন, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবার বিষয়ে ভারতের আপত্তি থাকা উচিত নয়। গণতান্ত্রিক আন্দোলন জয়যুক্ত করবার জন্য প্রয়োজন হলে সৈন্য পাঠিয়ে যুদ্ধও করতে হবে।

 শ্রী সুশীল ধাড়া বলেন, বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেবার ব্যাপারে ভারতই আগে পথ প্রদর্শক হোক। কারন স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠত হওয়ার ব্যাপারে শুধু বাংলাদেশের স্বার্থ নেই ভারতের তথা পশ্চিমবঙ্গেরও আছে। তিনি দেশের তরুন সমাজকে প্রস্তুত থাকবারও আহবান জানান।

 অধ্যাপক হরিপদ ভারতী বলেন, এতো দিনও ভারত সরকার বাংলাদেশের স্বীকৃতির প্রশ্নে নীরব থেকে প্রকারান্তরে পাকিস্তানের জঙ্গী শাহীকে সমর্থন জানাচ্ছেন। তিনি অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সক্রিয় সহযোগিতা দেবার দাবি জানান। সর্বশ্রী পান্না লাল দাশগুপ্ত, বীনা ভৌমিক, দক্ষিণারঞ্জন বসু মৈত্রেয়ী দেবী, জনাব লালজান প্রস্তাবের সমর্থনে বক্তৃতা করেন। অধ্যাপক সমর গুহ এমপি সভায় প্রস্তাবটি পাঠ করেন। সভাশেষে শ্রী সতোশ্বর মুখার্জি জাতীয় সঙ্গীত গান। বাংলাদেশের শিল্পী অধ্যাপক সুকুমার বিশ্বাস কয়েকটি গান গেয়ে শোনান।

“যেতে নাহি দিব”

(স্টাফ রিপোর্টার)

 পাকিস্তানের জন্য গম বোঝাই দুটি জাহাজের একটিকে যাত্রার জন্য পোর্ট কমিশনারস বুকিং দিয়েছেন।

 সেই অনুসারে ওই জাহাজ ’মারলিনের’ আজ বৃহস্পতিবার কলকাতা ছেড়ে চট্টগ্রাম অথবা করাচীর উদ্দেশ্যে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল।