বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড)/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে

শিরোনাম সূত্র তারিখ
বিশ্বশান্তি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ কর্তৃক অবিলম্বে বাংলাদেশ সমস্যার সমাধান দাবী দৈনিক ‘কালান্তর’ ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

অবিলম্বে বাংলাদেশের সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান চাই

জামশেদপুরের জনসভায় বিশ্বশান্তি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের দাবি

 জামশেদপুর, ১৫ই সেপ্টেম্বর (সংবাদদাতা)- সম্প্রতি জামশেদপুরে জনসভায় বিশ্ব শান্তি সংসদের ইতালীর কমিউনিষ্ট নেতা ও সংসদ সদস্য শ্রী আন্তোনীলো ট্রম্বোদরী এবং লেবাননের জননেতা মহম্মদ টোবেবা তাঁদের ভাষণে অবিলম্বে বাংলাদেশে সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের দাবি করেন। স্থানীয় সাকচী বেঙ্গল ক্লাবে বাংলাদেশ সংহতি কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় কমিউনিষ্ট ও শ্রমিক নেতা শ্রী বারীন দে।

 শ্রী ট্রম্বোদরী পাকিস্তান ইয়াহিয়া খাঁর সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে সেখানকার গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়ে তাঁর ভাষণ শুরু করেন। বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যে ব্যাপক গণহত্যা ও চণ্ডনীতি গ্রহণ করেছে তার বিরুদ্ধে তিনি ধিক্কার জানান। শ্রী ট্রম্বোদরী বলেন, যদি ইয়াহিয়া খাঁ ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ না করেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে মুসোলিনীর অবস্থাই হবে। তিনি দাবী করেন, অবিলম্বেই শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি দিয়ে জাতীয় পরিষদের। নির্বাচিত সদ্যেসের হাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্পণ করতে হবে। বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামকে সহায়তা করার জন্য তিনি ভারত সরকারের প্রশংসা করেন।

 মহম্মদ টোব্বো সভায় ঘোষণা করেন যে, শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার চক্রান্তকে ব্যর্থ করার জন্য তাঁরা বিশ্বের জনমতকে জাগ্রত করবেন। তিনি মুক্তি সংগ্রামকে সাফল্যের জন্য যুক্তফ্রণ্ট গঠনের উপর বিশেষ জোর দেন।

 বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সাধারন সম্পাদক জনাব আলি আকসাদ তাঁর ভাষণে বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামের পটভুমি বর্ণনা করেন। মুক্তি সংগ্রামকে সাহায্য করার জন্য ভারত সহ বিশ্বের প্রগতিশীল জনগণের কাছে তিনি তাঁর ভাষণে আহ্বা‌ন জানান।

 উল্লেখযোগ্য ঐ সভায় জামশেদপুর “বাংলাশেদ মুক্তি সংগ্রাম সহায়ক সমিতির” সাভাপতি ডাঃ বিষ্ণুপদ মুখার্জি জনাব আলি আকসাদের হাতে এক হাজার টাকার একটি চেক মুক্তিসংগ্রামীদের সাহায্যের জন্য প্রদান করেন।

 সভায় বিশ্ব শান্তি সংসদের ঐ দুই নেতার আগমন উপলক্ষে স্থানীয় ষ্টেশনে তাঁদের বিপুলভাবে সম্বর্ধনা জানান হয়। তাঁরা সভাশেষে কয়েকটি আলোচান সভায়ও যোগ দেন।